ফরজ গোসলের নিয়ম ও দোয়া
Share this
শরীরের ময়লা দূর করা ও স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সকল মানুষের গোসল করা কর্তব্য।
গোসল চার প্রকার। যথা-
- ফরয গোসল।
- ওয়াজিব গোসল।
- সুন্নাত গোসল ।
- মুস্তাহাব গোসল ।
গোসল কখন ফরজ হয়
চারটি কারণে গোসল ফরজ হয় । যথা-
(ক) স্বামী-স্ত্রীর মিলন হলে । স্ত্রীলিংগের ভিতরে পুরুষাঙ্গের মাথা প্রবেশ করলে তাতে বীর্য বের হোক বা না হোক স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর গোসল ফরজ হবে ।
(খ) স্বপ্নে বীর্য বের হলে নারী-পুরুষ উভয়ের একই হুকুম।
(গ) হস্ত মৈথুন বা পুংমৈথুন ইত্যাদি যে কোন উপায়ে কামোত্তেজনার সাথে বীর্য বের হলে ।
(ঘ) মেয়েলোকের হায়েজ-নেফাসের রক্তস্রাব বন্ধ হলে ।
গোসলের ফরজ কয়টি
গোসলের ফরয ভিতরে তিনটি । যথা—
(১) গড়গড়ার সাথে কুলি করা । তবে রোযাদার হলে গড়গড়া করবে না ।
(২) নাকে পানি প্রবেশ করিয়ে উত্তমরূপে ধৌত করা ৷
(৩) সর্বশরীরে পানি বইয়ে দেওয়া ।
ফরজ গোসলের নিয়ত
نَوَيْتُ الغُسَلَ لِرَفْعِ الْجَنَابَتِ .
উচ্চারণ : নাওয়াইতুল গুসলা লিরাফয়িল জানাবাহি অর্থ : নাপাকী হতে পাক ‘হওয়ার জন্য গোসল করছি।
পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায ও জুমআর নামাযের পূর্বে ওয়াক্ত হলে আযান দেয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ।
আরো পড়ুন:- নামাজের ফরজ কয়টি
সুন্নাত গোসল
(ক) জুমুআর নামায পড়ার জন্য গোসল করা।
(খ) দুই ঈদের দিনে ঈদের নামায পড়ার জন্য গোসল করা।
(গ) হজ্জ এবং ওমরার এহরাম বাঁধার পূর্বে গোসল করা ।
(ঘ) আরাফাত ময়দানে হজ্জের জন্য অবস্থানের পূর্বে গোসল করা ।
গোসলের সুন্নাত কয়টি
গোসলের ভেতরে সুন্নাত ৬টি । যথা-
(১) উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত তিন বার ধৌত করা।
(২) প্রথমে শরীরের নাপাকী ধুয়ে ফেলা ।
(৩) গুপ্তস্থান ধৌত করে নাপাকী পরিস্কার করা।
(৪) গোসলের আগে ওযু করা।
(৫) মাথা ও শরীর তিন বার ধৌত করা।
(৬) গোসলের স্থান হতে কিছুটা সরে প ধৌত করা। যদি গোসলের পানি গোসলের স্থানে জমে থাকে ।
গোসল ওয়াজিব কখন হয়
নিম্নে বর্ণিত কারনে গোসল ওয়াজিব হয় । যথা-
(ক) কোন কাফের ব্যক্তি স্ত্রী-সংগমজনিত নাপাকী অবস্থায় ইসলাম গ্রহণ করলে তার জন্য গোসল করা ওয়াজিব
(খ) মুসলমান মুর্দারের লাশ গোসল দেয়া অন্যান্য মুসলমানের উপর ফরযে কেফায়া ।
(গ) পনের বসর বয়স হবার পূর্বে বালক-বালিকার মধ্যে বালেগ হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পেলে তার উপর গোসল করা ফরয।
মুস্তাহার গোসল
(ক) মুর্দারকে গোসল করানোর পর গোসলদাতা গোসল করা ।
(খ) কোন কাফের মুসলমান হলে গোসল করা ।
(গ) পনের বসর বয়স্ক বালক-বালিকার বালেগ হওয়ার লক্ষণ দেখা না গেলেও তাদের গোসল করা ।
(ঘ) কাবা শরীফ তাওয়াফ করার জন্য গোসল করা ।
(ঙ) ১০ যিলহজ্জ মুজদালেফায় অবস্থানের জন্য গোসল করা।
(চ) মিনায় কংকর মারার জন্য গোসল করা ।
(ছ) মদীনা মোনাওয়ারায় প্রবেশ করার জন্য গোসল করা ।
(জ) রাসূলুল্লাহ (সঃ) -এর রওযা জিয়ারত করার জন্য গোসল করা। ।
(ঝ) সূর্যগ্রহণের নামাযের জন্য গোসল করা ।
(ঞ) এস্তেস্কার নামায পড়ার জন্য গোসল করা ।
(ট) বিপদ মুক্তি ও হাজত পূরণের নামায পড়ার জন্য গোসল করা ।
(ঠ) আল্লাহ তা’আলার দরবারে খাস তাওবা করার জন্য গোসল করা।
(ড) মুসাফিরী হতে গৃহে ফেরার পরে গোসল করা ।