পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানুষ কে
Share this
পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানুষ
পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ ব্যক্তিদের তালিকা নির্ধারণ করা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার এবং এটি অনেকাংশে নির্ভর করে ঐতিহাসিক ঘটনা, এবং মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। যদিও ভালো-মন্দের মাপকাঠি একেকজনের কাছে একেক রকম, ইতিহাসে কিছু ব্যক্তির কাজকে ব্যাপকভাবে নিন্দিত ও সমালোচনা করা হয়ে থাকে। নিচে এমন দশজন ব্যক্তির তালিকা দেওয়া হলো, যাদের কর্মকাণ্ড তাদেরকে ইতিহাস কুখ্যাত বা খারাপ মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানুষের নাম
ক্রম | নাম | দেশ |
১ | আডলফ হিটলার | জার্মান |
২ | ইদি আমিন | উগান্ডা |
৩ | লিওপল্ড | বেলজিয়ামের |
৪ | জোসেফ স্তালিন | সোভিয়েত ইউনিয়ন |
৫ | মাও সেতুং | চীন |
৬ | বেনিতো মুসোলিনি | ইতালি |
৭ | কিম জং-ইল এবং কিম জং-উন | উত্তর কোরিয়া |
৮ | ইয়াসুকুনি তোমোতা | জাপান |
৯ | হ্যারি হেডলি | যুক্তরাষ্ট্র |
১০ | কেম্পি ফুসে | আফ্রিকা |
আরো পড়ুন:- পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষের নাম
আডলফ হিটলার ছিলেন জার্মানির একনায়কতান্ত্রিক নেতা এবং নাৎসি পার্টির প্রধান, যিনি ১৯৩৩ সালে জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে ক্ষমতায় আসেন।হিটলারের শাসনামলে ইহুদি জনগণের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত গণহত্যা শুরু হয়,আনুমানিক ৬০ লাখ ইহুদি সহ মোট ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ নাৎসি বাহিনীর হাতে নিহত হয়।১৯৩৯ সালে পোল্যান্ড আক্রমণ করার মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়, যা পৃথিবীকে ব্যাপক ধ্বংস এবং মানবিক বিপর্যয়ে ফেলে। যুদ্ধের ফলে প্রায় ৭ কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটে।হিটলারের শাসন মানব ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ও নিষ্ঠুর অধ্যায়গুলোর মধ্যে একটি।
জোসেফ স্তালিন: জোসেফ স্তালিন ছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী এবং বিতর্কিত নেতা। লেনিনের মৃত্যুর পর তিনি সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন স্তালিনের শাসনে রাজনৈতিক শুদ্ধি অভিযান চালানো হয়, যা ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত চলেছিল। এই অভিযানে স্তালিন তার রাজনৈতিক বিরোধী, সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এবং সাধারণ নাগরিকদের বন্দী, নির্বাসিত অথবা মৃত্যুদণ্ড দেন। আনুমানিক ৫ লাখ থেকে ২০ লাখ মানুষ এই অভিযানে নিহত হন।
ইদি আমিন: ইদি আমিন (১৯২৫–২০০৩) ছিলেন উগান্ডার তৃতীয় রাষ্ট্রপ্রধান এবং ১৯৭১ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত উগান্ডার একনায়কতান্ত্রিক শাসক। তার শাসন ছিল অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং ভীতিকর,তার শাসনে আনুমানিক ১ থেকে ৫ লাখ মানুষ নিখোঁজ বা নিহত হয়। তার শাসনে উগান্ডায় বর্ণবাদী দমননীতি কার্যকর ছিল, যেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও রাজনৈতিক বিরোধীরা অত্যাচারের শিকার হতো।
লিওপোল্ড: দ্বিতীয় লিওপোল্ড ছিলেন বেলজিয়ামের রাজা এবং কঙ্গো ফ্রি স্টেট এর একচ্ছত্র শাসক। ১৮৬৫ সালে তিনি পিতার মৃত্যুর পর বেলজিয়ামের সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং ৪৪ বছর ধরে রাজত্ব করেন।লিওপোল্ডের শাসনে কঙ্গোতে স্থানীয় জনগণের ওপর ভয়াবহ অত্যাচার চালানো হয়।শাসনকালে ১ কোটি মানুষ মারা যায়, যার মধ্যে অনেকে খাদ্য অভাবে, অত্যাচারে এবং ব্যাধিতে মারা গিয়েছিল।
পল পট: পল পট (১৯২৫–১৯৯৮), আসল নাম সলথ সার, ছিলেন কম্বোডিয়ার খেমার রুজ দলের নেতা এবং ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর একনায়ক।কম্বোডিয়ার কিলিং ফিল্ডস নামে পরিচিত ঘটনাটি পল পটের শাসনের সবচেয়ে ভয়াবহ অধ্যায়। তার শাসনে, আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ লাখ মানুষ নিহত হয়।
ইভান দ্য টেরিবল: ইভান গ্রোজ্নি তার শাসনকালে অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং ভয়ংকর শাসক হিসেবে পরিচিত। তিনি তার রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে দমন অভিযান চালান, তার শাসন রাশিয়ার ইতিহাসে এক শক্তিশালী, তবে ভয়াবহ অধ্যায় হিসেবে গণ্য হয়।
বেনিতো মুসোলিনি: বেনিতো মুসোলিনি ছিলেন ইতালির একজন একনায়ক শাসক এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে ইতালির ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধান নেতা।মুসোলিনি ছিলেন একজন নিষ্ঠুর একনায়ক যিনি ইতালিতে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করে তার দেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি বড় শক্তিতে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। তার শাসনকালে তিনি রাজনৈতিক দমন, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ইতিহাসে চিহ্নিত হয়েছেন।
শেষকথা: ইতিহাসের নেতিবাচক দিকগুলোর সম্পর্কে জানার মাধ্যমে আমরা শিক্ষা লাভ করতে পারি এবং ভবিষ্যতে সেই ধরনের ভুল পুনরাবৃত্তি এড়াতে সচেতন হতে পারি।যদিও এই ধরনের তালিকা তৈরি করা কিছুটা ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভরশীল এবং সমাজের মধ্যে বিভিন্ন মতভেদ থাকতে পারেএমন তালিকা আমাদের ইতিহাসের অন্ধকার দিকগুলোর প্রতি সচেতন করতে পারে, যাতে ভবিষ্যতে এসব ভুল না করা হয় এবং সমাজে আরও শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:- আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থসহ ফজিলত