ঈমান কাকে বলে
Share this
ঈমান অর্থ : ইসলামী পরিভাষায় মুখে স্বীকার করার সাথে সাথে অন্তরে দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করার নাম ঈমান। শুধু মুখে স্বীকার করলে অন্তরে বিশ্বাস না করলে ঈমান হয় না ।
আবার ঈমান শুধু অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস রাখলেই হবে না, মুখেও স্বীকার করতে হবে।
এতদ্ব্যতীত ঈমানের আর একটি অঙ্গ হল, আমল বিল আরকান অর্থাৎ ঈমান আনার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ যে সকল নেক কাজ করার হুকুম করেছেন, সেগুলো ঠিকভাবে আদায় করা ।
এই প্রেক্ষিতে ঈমানের শর্ত হল তিনটি । যথা—
(১) মুখে স্বীকার করা,
(২) অন্তরে বিশ্বাস করা এবং
(৩) আল্লাহর যাবতীয় হুকুম -আহকাম পালন করা ও নিষিদ্ধ কাজ হতে বিরত থাকা।
ঈমানের মৌলিক বিষয় সাতটি। উক্ত সাতটি বিষয় ও তার অর্থ সঠিকভাবে শিক্ষা করা প্রয়োজন ।
ঈমান দুই প্রকার ঃ ঈমানে মুজমাল ও ঈমানে মুফাচ্ছাল ঈমানে মুজমাল
“ঈমানে মুজমাল অর্থ ঈমানের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। অর্থাৎ আমরা যে কালেমা পাঠ করে আমাদের ঈমানের বিষয়টি সংক্ষিপ্ত ভাষায় প্রকাশ করে থাকি, তাকে ঈমানে মুজমাল বলে যথা-
উচ্চারন : আমানতু বিল্লাহি কামা হুয়া বিআসমায়িহী ওয়া সিফাতিহী ওয়া কাবিলতু জামীআ আহকামিহী ।
অর্থ : আল্লাহ তাআলার জাত ও ছিফাত এর প্রতি আমি বিশ্বাস করলাম এবং তাঁর আদেশসমূহ কবুল করলাম।
কয়েকটি শব্দ দ্বারা মাত্র একটি বাক্য, অথচ তার ভেতরে মানুষের সারা জীবনের পূর্ণাঙ্গ একটি চিত্র রয়েছে। যে মানুষ সর্বান্তঃকরণে উক্ত কালেমা পাঠ করে, সে জীবনের কোন ক্ষেত্রে কোন বিষয়ে আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে পারে না।
যেহেতু সে দেলের সাথে আল্লাহ তাআলাকে বিশ্বাস করেছে এবং তাঁর সমুদয় হুকুম আহকাম মান্য করে চলার অঙ্গীকার করেছে।
আরো পড়ুন:- ইসলাম শব্দের অর্থ কি
ঈমানে মুফাচ্ছাল
ঈমানে মুফাচ্ছাল-এর অর্থ ঈমানের বিস্তারিত বর্ণনা। এই কালেমার দ্বারা ঈমানের বিষয়সমূহ ভিন্ন ভিন্নভাবে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয় । যেমন-
উচ্চারণ : আমানতু বিল্লাহি ওয়া মালায়িকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুসুলিহী ওয়াল ইয়াওমিল আখিরি ওয়াল কাদরি খাইরিহী ওয়া শাররিহী মিনাল্লাহি তাআলা ওয়াল বাছি বা দাল মাওত।
অর্থ : আল্লাহ তাআলার উপর আমি ঈমান আনলাম এবং তাঁর ফেরেশতাদের উপর, কিতাবসমুহের উপর, নবী-রাসূলগণের উপর, বিচার দিবসের উপর, তকদিরের উপর তথা ভাল-মন্দ সবই আল্লাহ তাআলার মর্জিমত হয়ে থাকে এবং মৃত্যুর পরে পুনরুত্থানের উপর
এই কালেমার ভেতরে যে সাতটি বিষয়ের উল্লেখ আছে, সেগুলোর উপর ঈমান আনতে হবে। কেননা কেউ তার একটির উপরও ঈমান না আনলে বে-ঈমান বা অবিশ্বাসী হবে এবং তার একটি বাদ দিলে অপরটির প্রতি বিশ্বাস করা প্রমাণিত হবে না।
যেমন, কোন ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান আনল, তিনিই সারা জাহানের সৃষ্টিকর্তা ও প্রতিপালক; কিন্তু ফেরেশতাগণের উপর অথবা রাসূলগণের উপর ঈমান আনল না, তাতে সে ব্যক্তি ঈমানদার হবে না।
এই সবের উপর ঈমান না আনার অর্থ আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান না আনা। কেউ আল্লাহর উপর বিশ্বাস করল, কিন্তু তাঁর হুকুমের উপর বিশ্বাস করল না, তাতেও সে মুমিন হবে না।
কেউ আসমানী কিতাব, রাসূলগণ ও ফেরেশতাগণের উপর ঈমান রাখল, কিন্তু মৃত্যুর পরে পুনরুত্থানের উপর ঈমান আনল না, সেও ঈমানদার হবে না ।