নামাজ কি এবং কেন পড়বেন
Share this
নামাযের কুরআনী পরিভাষা হল (ছালাত)। এই ছালাতের হুকুম দেয়া হয়েছে (ইক্বামাত) শব্দের মাধ্যমে। ইক্বামাতে ছালাত কুরআন শরীফের বহুল ব্যবহারিত একটি পরিভাষা। ঈমানদারদের প্রতি আল্লাহ তালার নির্দেশসমূহের মধ্যে ইক্বামাতে ছালাতের নির্দেশই হল সর্বপেক্ষা বেশী।
এই ইক্বামাতে ছালাতের শব্দ দুটোর মধ্যে ইকামাত শব্দের শাব্দিক অর্থ-স্থাপন করা, কায়েম বা প্রতিষ্ঠা করা। আর ছালাত শব্দের শাব্দিক অর্থ- দু’আ বা প্রার্থনা।
ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় ইকামাতে ছালাতের অর্থ হলাে-শরীয়তের নির্ধারিত সময় মতে যাবতীয় শর্তাবলী রক্ষা করে সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলীর মাধ্যমে আল্লাহ্ তা’লার স্মরণ ও আনুগত্য করা এবং তা ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে কায়েম করা এবং কায়েম রাখা ।
উর্দু পরিভাষায় আমাদের কাছে ছালাতের এ ক্রিয়া-কর্মের সাধারণভাবে পরিচয় হল নামায। এ নামায প্রত্যেক মুসলমানের উপর অত্যাবশ্যকীয় ফরজ।
কুরআন এবং হাদীছে নামাযের যে গুণ, বৈশিষ্ট ও দৃষ্টিভঙ্গি পেশ করা হয়েছে তা অবশ্যই নামায অত্যাবশ্যকীয় ফরজ হবার যথার্থতা প্রমাণ করে।
আরো পড়ুন: নামাজ পড়ার নিয়ম
তাই নামাযের ঐ গুণ-বৈশিষ্ট এবং দৃষ্টিভঙ্গি সবই নামায কায়েমের সাথে সম্পৃক্ত। এ জন্য নামাযের ফলাফল তখনই পরিলক্ষিত হয়, যখন নামাযী গতানুগতিকভাবে। নামায না পড়ে বরং উপরে বর্ণিত অর্থে নামায কায়েম করে। আর তা।
হলে কোন কোন ব্যক্তিকে নামায পড়া সত্বেও অন্যায় বা অশ্লীল কাজ কর্মে জড়িত দেখাও অসম্ভব নয়। যে ব্যক্তি অন্তরের সাথে বিশ্বাস করে কালেমা তাইয়্যেবা পাঠ করবে, সে সাথে সাথে ঘােষণা করে যে- আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক এবং একক, তাঁর কোন শরীক নেই।
মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। এভাবে একজন ব্যক্তি সাধারণতঃ মুসলমান হয়। কিন্তু সে ঐ কালেমা তাইয়্যেবার মধ্যেমে স্বতস্ফূর্তভাবে এ কথা স্বীকার করেছে যে, আল্লাহই একমাত্র ইলাহ, যিনি হল-একমাত্র মা’বুদ-উপাস্য, আইনদাতা, বিধানদাতা, হুকুম বা নির্দেশদাতা, সর্বময়কর্তা।
তাই প্রত্যেক মুসলমান জীবনের সর্বস্তরে আল্লাহ্র আইন-বিধান এবং হুকুম বা নির্দেশ মেনে চলবে এটাই স্বাভাবিক। একজন ব্যক্তি মুসলমান হবার পর তার উপর সাথে সাথে আল্লাহর বিধান বা যে নির্দেশটি তাৎক্ষনিকভাবে উপস্থিত হয়, তা হল দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায কায়েম করা।
আরো পড়ুন:- নামাজে যে সকল কাজ মাকরূহ
এছাড়া অন্যান্য আদেশ-নিষেধ বা বিধানাবলী মেনে চলতে হয় শর্ত ও সময় সাপেক্ষে। যেমন-রােজা ফরজ হয় রমজান মাস উপস্থিত হলে। হজ্ব ফরজ হয় শক্তি এবং সামর্থ থাকলে হজ্বের মাসে। যাকাৎ ফরজ হয় যাকাতের ছাহেবে নেছাব হলে এবং নেছাবের বর্ষ পূর্ণ হলে ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু নামাযের নির্দেশ পালন করার জন্য এ ধরণের বিশেষ শর্ত সাপেক্ষের কোন অবকাশ নেই। প্রতিদিনই পাঁচ ওয়াক্ত সময় উপস্থিত হচ্ছে। এ সময়ে আল্লাহ তালার নির্দেশ পাঁচ ওয়াক্ত নামায অবশ্যই কায়েম করতে হবে। অন্যথায় আল্লাহর উপর যে ঈমান আনা হয়েছে তা প্রমাণ হবে না।
নামায ঈমানের বাস্তব রূপ এবং আল্লাহ তা’লার দাসত্ব বা আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ ও প্রতীক। কুরআন শরীফে আল্লাহ রাবুল 1 আ’লামীন নামায কায়েম করার জন্য যা নির্দেশ দিয়েছেন এবং
হাদীছ শরীফে রাসূল করীম (সঃ) নামায পড়ার জন্য তাকীদ করে যে বাণী ঘােষণা করেছেন, তা একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে সহজে বুঝা যায়, করতে পারে না। নামায কায়েম না করে বা নামায না পড়ে কোন ব্যক্তি মুসলমান দাবী।