দোয়া

আযানের জবাব, আযানের দোয়া বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থসহ

Share this

আযান কি?

নামাযের সময় হলে একজন লোক উচ্চৈঃস্বরে আল্লাহ্র ইবাদতের সময় হয়েছে বলে মুসল্লিগণকে আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে হাজির হওয়ার জন্য আহবান করে; এই আহবানকে ‘আযান ‘ বলে । যে আযান দেয়, তাকে — মুয়াযযিন’ বলে। বিনা পারিশ্রমিকে আযান দেয়ার ফযিলত অনেক বেশি ।

আযানের নিয়ম : দুই বাক্যের মাঝখানে একটু বিরতী দিয়ে আযানের শব্দাগুলো ভিন্ন ভিন্ন করে বলবে। আযানে কোন হরফ বাড়াবে না বা কমাবে না। আওয়াজ সুমিষ্ট করে বলবে। গানের মত করে অথবা স্বরকে অস্বাভাবিকভাবে উঁচু করে অক্ষরগুলো বাড়িয়ে-কমিয়ে কিংবা বেশি টেনে কলেমাগুলো রদবদল করে দিবে না ।

আযানের জবাব দেওয়ার নিয়ম

যারা আযানের কলেমাগুলো শুনবে তাদের প্রতি আযানের জবাব দেয়া মুস্তাহাব। তবে ক্রমাগত জবাব অর্থাৎ আযানের সাথে সাথে নামাযের প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে যাওয়া ওয়াজিব। মুয়াযযিন আযানের যে সমস্ত কলেমা বলবে শ্রোতারা ও তাই বলবে। কিন্তু তিনটি স্থানে পরিবর্তন হবে।

যথা- মুয়াযযিন যখন ‘হাইয়্যা আলচ্ছালাহ’ দুই বার বলবে তখন শ্রোতাগণ নিম্নলিখিত কলেমা দুই বার পাঠ করবে এবং (২) ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলার সময়ও নিম্নলিখিত একই কলেমা দুই বার পাঠ করবে।

বাংলা উচ্চারণঃ লা হাওলা ওয়ালা কুওওতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম । ফজরের আযানে মুয়াযযিন যখন ‘আচ্ছালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ দুই বার বলবে, তখন শ্রোতাগণ নিম্নলিখিত কলেমা বলবে ।

বাংলা উচ্চারণ ঃ ছাদাক্বতা ওয়া বারারতা ।

অর্থ : তুমি সত্য বলেছ ও পূন্যকরেছ।

আরো পড়ুন:- তওবার দোয়া | তওবার নামাজ

কখন আযানের জবাব দেয়া ঠিক নয়

১। হায়েজ নেফাসের সময়।

২। খুৎবা পাঠকালীন ।

৩। নামায পড়া অবস্থায় ।

৪ । এলমে দ্বীন শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার সময় ।

৫। সহবাসকালে ।

৬। পায়খানা প্রস্রাব করার সময় ।

৭। খানা পিনার সময় ।

  • যদি শহরে এক সঙ্গে একাধিক মসজিদে আযান হয়, তবে প্রথমে পরিস্কার ভাবে যে আযান শুনবে তার জওয়াব দিবে।

আযানের দোয়া

আযাজের দোায়া বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বা হাযিহিদ্দা’ ওয়াতিত তাম্মাতি অচ্ছালাতিল ক্বায়িমাতি আতি মুহাম্মাদানিল অছীলাতা অল ফাদীলাতা অব’আছহু মাক্কামাম মাহমূদানিল্লাযী অ’আদতাহু ইন্নাকা লা তুখলিপুল মী’আদ ।

বাংলা অর্থ : হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহবান এবং অনুষ্ঠিতব্য নামাযের তুমিই মালিক । হযরত মুহাম্মাদকে দান কর উসিলা ও সম্মান । আর পৌছাও তাঁকে তোমার ওয়াদাকৃত মাক্কামে মাহমুদে । নও তুমি ওয়াদার অন্যথাকারী ।

আযানের মাহাত্ম্য

হাদীসে এসেছে, যে আযান দিবে ও ইকামত বলবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে তার গুনাহ্ মাফ করে তাকে বেহেশতে প্রবেশ করানো হবে। অন্য হাদীসে আছে, যে সাত বৎসর কাল বিনা বেতনে আযান দিবে, সে বিনা হিসাবে বেহেশতে যাবে। অন্য এক হাদীসে আছে, হাশরের ময়দানে মুয়াযযিনের মর্যাদা এত উর্ধ্বে হবে যে, সে যত লোকের ভিড়ের মধ্যেই হোক না কেন সকলের মাথার ওপর দিয়ে তার মাথা দেখা যাবে।

যে কাজের যত বড় মর্তবা, তার দায়িত্বও তত বেশি হয় । তাই এক হাদীসে আছে- মুয়াযযিন হলেন আমানতদার এবং ইমাম হলেন জিম্মাদার; অর্থাৎ ওয়াক্ত না জেনে আযান দিলে বা মিনারের ওপর চড়ে লোকের বাড়ি-ঘরের দিকে তাকালে মুয়ান শক্ত গুনাগার হবে। আর নামাযের মধ্যে কোনো ক্ষতি করলে বা যাহেরি বাতেনি পরগোরির সঙ্গে নামায না পড়লে তার জন্য ইমাম দায়ী থাকবেন

আরেক হাদীসে আছে, মুয়ােিনর আওয়াজ যত দূর যাবে তত দূরের জ্বিন ইন্‌সান, আসমান, জমিন, বৃক্ষ, পশুপাখি সকলেই তার জন্য সাক্ষ্য দিবে

ইক্বামত : ইকামত এবং আযান একই রকম। কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে পার্থক্য রয়েছে। যথা- (ক) আযান, নামায শুরু হওয়ার এতটুকু পূর্বে হওয়া আবশ্যক, যেন পার্শ্ববর্তী মুসল্লিগণ অনায়াসে স্বাভাবিকভাবে অযূ ইস্তিঞ্জা শেষ করে জামাতে এসে যোগদান করতে পারে ।

কিন্তু ইকামত শুনা মাত্রই সাথে সাথে নামাযে দাঁড়িয়ে কাতার সোজা করতে হবে।

(খ) আযান মসজিদের বাইরে দিতে হবে, কিন্তু ইকামত মসজিদের ভিতরে দিতে হবে। তবে শুধু জুম’য়ার সানি আযান মসজিদের ভিতর হবে।

(গ) আযান যথাসম্ভব উচ্চৈঃস্বরে দিতে হবে, কিন্তু ইকামত তত উচ্চৈঃস্বরে নয়, শুধু উপস্থিত ও নিকটবর্তী সকলে শুনতে পায় এতটুকু উচ্চৈঃস্বরে বলাই যথেষ্ট।

(ঘ) ফজরের _আযানের মধ্যে দ্বিতীয়বার — হাইয়া আলাল ফালাহ্’ বলার পর দুইবার ‘ আছ্‌ছালাতু খাইরুম মিনান্নাওম’ বলা হয়; কিন্তু ইকামতের মধ্যে তা বলতে হবে না; বরং তার পরিবর্তে পাঁচ ওয়াক্তের ইকামতেই দ্বিতীয়বার — হাইয়্যা আলাল ফালাহ, বলার পর

দুইবার ‘ক্বাদ ক্কামাতিছালাহ বলতে হবে। (ঙ) আযানের সময় আঙ্গুল দ্বারা কানের ছিদ্র বন্ধ করতে হয়; কিন্তু ইকামতে তা আবশ্যক নয় এবং ‘ হাইয়্যা আলাচ্‌ছালাহ্’ ও হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময় ডানে বামে মুখ ফিরাবারও আবশ্যকতা নেই। তবে কোনো কোনো কিতাবে যে মুখ ফিরাবার কথা বলা হয়েছে তা (অতি বড় মসজিদ হলে আবশ্যক বোধে করা যেতে পারে) কিন্তুজরুরি নয় ।

ইক্বামাতের জওয়াব : ইকামাতে জবাব দেয়াও মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। ইকামতের জবাবও আযানের জওয়াবের মতই । তবে ‘ক্বাদ ক্কামাতিচ্‌ছালাহ’ শুনে শ্রোতা বলবে, ‘আক্বামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা ।

আযান ইকামত ছাড়া যে নামায পড়তে হয়

ফরজে-আইন ব্যতীত অন্য কোনো নামাযের জন্য আযান বা ইকামত নেই । ফরজে কেফায়াই হোক, যেমন – জানাযার নামায বা ওয়াজিব নামাযই হোক, যেমন বিত্র এবং ঈদের নামায বা নফল হোক, যেমন, কুছুফ, খুছুফ, এশ্রাক, এস্তেস্কা এবং তাহাজ্জুদ ইত্যাদি নামাযে আযান ও ইকামত নেই । — আলমগীরী

আযান- ইক্বামত দেয়া কখন জরুরী

মাসয়ালা : মুসাফির হোক বা মুকিম হোক, জামাত হোক বা একাই হোক, ওয়াক্তিয়া নামাযই হোক বা কাযা নামাযই হোক, সমস্ত ‘ফরজে-আইন— নামাযের জন্য পুরুষদের একবার আযান দেয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা (প্রায় ওয়াজিব তুল্য) কিন্তু জুময়ার জন্য দুবার আযান দেয়া সুন্নত ।

মাসয়ালা : জিহাদ বা অন্যকোন ধর্মীয় কাজে লিপ্ত থাকা বশত অথবা অনাবশ্যক কোনো কারণ বশত যদি সর্ব-সাধারণের নামায কাযা হয়, তবে সেই কাযা নামাযের জন্যও উচ্চৈঃস্বরেই আযান ইকামত বলতে হবে। কিন্তু যদি নিজের আলস্য বা বেখেয়াল বশত নামায কাযা হয়ে থাকে, তবে সেই কাযা নামায চুপে চুপে পড়া উচিত ।

কাজেই তার জন্য আযান ইকামত কানে আঙ্গুল না দিয়ে চুপে চুপেই বলতে হবে, যাতে অন্য লোকেরা না জানতে পারে। কারণ, দ্বীনের কাজে অলসতা করা বা খেয়াল না রাখা গুনাহ্র কাজ এবং গুনাহ্ কাজ বা কথা লোকের নিকট প্রকাশ করা নিষেধ।

যদি কয়েক ওয়াক্তের কাযা নামায এক সঙ্গে পড়ে, তবে শুধু প্রথম ওয়াক্তের জন্য আযান দেয়া সুন্নত, বাকি যে কয় ওয়াক্ত ঐ সময় একসঙ্গে পড়বে তার জন্য পৃথক পৃথক আযান দেয়া নূরুল ঈযাহ্ সুন্নত নয়— বরং মুস্তাহাব; তবে ইকামত সব ওয়াক্তের জন্যই পৃথক পৃথক দেয়া সুন্নত।

মাসয়ালা : সফরের সময় যদি কাফেলার সমস্ত লোক উপস্থিত থাকে, তবে তাদের জন্য আযান মুস্তাহাব, সুন্নতে মুয়াক্কাদা নয় । কিন্তু ইকামত সব অবস্থাতেই সুন্নত ।

দুররে মোখতার মাসয়ালা : ওযর বশত বাড়িতে একা বা জামাতে নামায পড়লে আযান দেয়া মুস্তাহাব। যদি মহল্লা বা গ্রামের মসজিদে আযান হয়ে থাকে, তবে সেখানে নামায পড়া উচিত। কারণ,মহল্লার মসজিদ তাদের জন্য যথেষ্ট। যে পল্লীতে বা পাড়ায় মসজিদ

আছে, সেখানে মসজিদে আযান ইকামত ও জামাতের বন্দোবস্ত করা পাড়াবাসীর সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা (ওয়াজিবের কাছাকাছি) তা সত্ত্বেও যদি আযানের বন্দোবস্ত কেউ না করে, তবে সকলেই গুনাগার হবে।

মাঠের মধ্যে বা বিলের মধ্যে মহল্লার মসজিদের আযানের আওয়াজ শুনা গেলে মসজিদে এসেই নামায পড়া উচিত, কিন্তু মসজিদে না এসে যদি সেখানে নামায পড়ে, তবে আযান দেয়া সুন্নত নয়, কিন্তু ইকামত সব অবস্থায়ই সুন্নত । মুস্তাহাব। যদি আযানের আওয়াজ শুনা যায়, তবে আযান দিয়েই নামায পড়তে হবে;

আযান ও ইকামত দেয়া কখন মাকরূহ্

মাসয়ালা : মহল্লার মসজিদে আযান ইকামতের সাথে জামাত হয়ে থাকলে পুনরায় সেখানে আযান ইকামত দিয়ে জামাত করা মাকরূহ্ । কিন্তু পথের বা বাজারের মসজিদ হলে বা যে মসজিদে ইমাম, মুয়ানি বা মুসল্লি নির্দিষ্ট নেই সেখানে মাকরূহ্ নয়; বরং উত্তম। মহল্লার মসজিদেও যদি বিনা আযানে জামাত হয়ে থাকে, তবে পুনঃজামাত আযান ব্যতীত শুধু ইকামত আস্তে আস্তে অনুচ্চ শব্দে নামায পড়বে। –

মাসয়ালা : যে স্থানে জুম’য়ার সকল শর্তাবলী পাওয়া যায় এবং জুময়ার নামায পড়া হয়, সেখানে কোনো ওযর বশত বা বিনা ওযরে জুময়ার আগে বা পরে যদি কেউ যোহরের নামায পড়ে, তবে আযান ইকামত বলা মাকরূহ্ ।

মাসয়ালা : নামায একাই পড়ুক বা জামাতে পড়ুক- স্ত্রীলোকের আযান ইকামত বলা মাকরুহ্। – দুরে মোখতার

আযান ও ইকামতের ভেতর সুন্নত ও মুস্তাহাবসমূহ

মাসয়ালা : মসজিদের বাইরে উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে আযান দিবে, ইকামত মসজিদের ভিতরে দিবে। মসজিদের ভিতরে আযান দেয়া মাকরূহ্ তাযিহি । কিন্তু জুম’য়ার সানী আযান মসজিদের ভিতরে মিম্বরের সামনে দেয়া মাকরুহ্ নয় । সাহাবা ও তাবেঈনদের যমানা হতে এখন পর্যন্ত সমস্ত ইসলামী শহরে মসজিদের ভিতর মিম্বরের সামনে দাঁড়িয়ে জুময়ার সানি আযান হয়ে আসছে।

মাসয়ালা : আযান দাঁড়িয়ে দিতে হবে। বসে আযান দেয়া হলে পুনরায় আযান দিতে হবে। তবে যদি কোনো মায়ুর লোক শুধু নিজের নামাযের জন্য বসে বসে আযান দেয়, তাতে দোষ নেই।

অবশ্য যদি কোনো মুসাফির, আরোহী কিংবা মুকিম ব্যক্তি শুধু নিজের নামাযের জন্য বসে আযান দেয়, তবে পুনরায় আযান দেয়ার প্রয়োজন হবে না ।

মাসয়ালা : আযানের মধ্যে ‘ হাইয়্যা আলাচ্‌ছালাহ্’ বলার সময় ডান দিকে এবং হাইয়্যা আলাল ফালাহ্’ বলার সময় বাম দিকে মুখ ফিরানো সুন্নত। তা নামাযের আযান হোক বা অন্য আযান হোক, কিন্তু আযানের সাথে বুক এবং পা ঘুরাবে না ।

মাসয়ালা : আযান এবং ইকামত বলার সময় কিবলার দিকে মুখ রাখা সুন্নত; অন্য দিকে মুখ করা মাকরূহে তাযিহি ।

মাসয়ালা : আযান দেয়ার সময় হৃদসে আর হতে পাক হওয়া সুন্নত। উভয় হৃদস হতে পাক হওয়া মুস্তাহাব।। গোসল বিহীন অবস্থায় আযান দেয়া মাকরূহে তাহরিমি।

যদি কেউ বে-গোসল অবস্থায় আযান দেয়, তবে আযান দোরিয়ে দেয়া উচিত। কিন্তু বে- অযূ অবস্থায় আযান দিলে তা দৌরাতে হবে না। আর বে- গোসল ও অবস্থায় ইকামত বলা মাকরূহ তাহরিমি।

আযান বা ইকামতের শব্দগুলোর যে তরতিব লেখা হয়েছে, সেই তরতিব ঠিক রাখা সুন্নত।

মাসয়ালা ঃ আযান বা ইকামত বলার সময় মুয়াযযিন কোন কথা বলবে না, যারা আযান ইকামত শুনে তাদেরও সব কাজ-কর্ম পরিত্যাগ করে আযান ইকামত শ্রবণ এবং আযান ও ইকামতের জবাব দেয়া উচিত এমন কি সালাম দেয়া নেয়াও অনুচিত।

মাসয়ালা ঃ যদি মুয়াযযিন আযান ও ইকামতের মাঝখানে অধিক কথা বলে, তবে পুনরায় আযান দিবে, কিন্তু পুনরায় ইকামত বলবে না ।

আযান ও ইকামত সম্পর্কিত কয়েকটি প্রয়োজনীয় বিষয়

মাসয়ালা ঃ আযানের জবাব যদি কেউ ভুলবশত কিংবা স্বেচ্ছায় সঙ্গে সঙ্গে না দিয়ে থাকে, তবে স্মরণ হলে কিংবা ইচ্ছা করলে আযান শেষ হয়ে যাওয়ার পর অনেক সময় চলে না গিয়ে থাকলে জবাব দিতে পারবে নতুবা নয় ।

মাসয়ালা : ইকামত বলার পর যদি অনেকক্ষণ সময় অতিক্রান্ত হয় অথচ জামাত শুরু না হয়, তবে পুনরায় ইকামত বলতে হবে; কিন্তু অল্প সময় দেরি করলে কোনো ক্ষতি নেই । যদি ফজরের ইকামত হয়ে যায় এবং ইমাম সুন্নত পড়া শুরু করে, তবে এই ব্যবধান ধরা হবে না এবং ইকামত পুনরায় দিতে হবে না; কিন্তু যদি নামায ব্যতীত ইকামত দোহরাতে হবে। খাওয়া দাওয়া ইত্যাদি অন্য কোনো কাজ করে, তবে তাকে বেশি ব্যবধান ধরা হবে এবং

মাসয়ালা ঃ আযান দেবার সময় আযান পূর্ণ হবার পূর্বে যদি মুয়াযযিন কোন কারণে মারা যায়, বা বেহুশ হয়ে যায় বা হঠাৎ আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়, বা এমনভাবে ভুলে যায় যে, নিজেরাও মনে না আসে এবং অন্য কেউ বলে না দেয়, বা পেশাব-পায়খানার চাপে বা গোসলের হাজতে আযান মাঝখানে ছেড়ে দিয়ে ভেঙ্গে যায়, তবে আযান ইকামত পূৰ্ণ

করেই অযূ করতে যাওয়া উত্তম। ফরজ নামায পড়বে সেই মসজিদেই আযান দিতে হবে ।

মাসয়ালা ঃ এক মুয়াযযিনের দুই মসজিদে আযান দেয়া মাকরূহ্ । যে মসজিদে

মাসয়ালা ঃ যে আযান দিবে ইকামত বলা (সওয়াব অর্জন করা) তারই হক (প্রাপ্য)। অবশ্য সে যদি উপস্থিত না থাকে বা অন্য কাউকেও ইকামত বলার অনুমতি দিয়ে দেয়, তবে অন্য লোকেও বলতে পারে।

মাসয়ালা ঃ এক মসজিদে এক সময়ে কয়েক জনে মিলে আযান দেয়াও জায়েয আছে ।

মাসয়ালা ঃ ইকামত যে জায়গায় দাঁড়িয়ে শুরু করবে সেখানেই শেষ করবে ।

মাসয়ালা ঃ আযান বা ইকামত সহীহ্ হওয়ার জন্য নিয়্যত শর্ত নয় বটে, কিন্তু নিয়্যত ব্যতিরেকে সওয়াব পাবে না। নিয়্যত হচ্ছে এই— মনে মনে চিন্তা করবে যে, আমি এই আযান বা ইকামত শুধু সওয়াবের নিয়্যতে এবং আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে বলছি, এতদ্ব্যতীত আমার জন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই।

মুয়াযযিন বা আযান দাতার যোগ্যতা

১। মুয়াযিন পুরুষ হওয়া চাই। স্ত্রীলোকের আযান দেয়া মাকরূহ্ ে তারিমি। মেয়েলোক আযান দিলে তা দোরাতে হবে, কিন্তু ইকামত দোহ্র্রাতে হবে না। কারণ শরীয়তে ইকামত দোহ্র্রাবার বিধান নেই । তবে আযান দোহ্রাবার হুকুম আছে

২। মুয়াযযিন সজ্ঞান পুরুষ হতে হবে। পাগল বা অবুঝ ছেলের আযান মাকরূহ্ । তাদের আযান দোরাতে হবে, ইকামত দোরাতে হবে না

৩। মুয়াযযিনের জরুরি মাসয়ালা-মাসায়েল এবং নামাযের ওয়াক্তগুলো সঠিক ভাবে জানা থাকা চাই । অন্যথায় সে আযানের পূর্ণ সওয়াব পাবে না

৪। মুয়ানকে দ্বীনদার পরহেযগার হতে হবে এবং কে জামাতে আসল কে না আসল, সে বিষয়ে তারও সতর্ক থাকা চাই- যদি ফেত্নার আশংকা না থাকে ।

৫। যার গলার আওয়াজ বড় তাকেই মুয়াযযিন নিযুক্ত করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *