জানতে হবে

নফল নামাজ

Share this

শুক্রবার রাতের নফল নামাজ

সাহাবী হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে মাগরিব ও এশার ওয়াক্তের মধ্যবর্তী সময় বার রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে হয়।

এ নামাজ সূরা ফাতিহার পরে যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়া যায়। যে ব্যক্তি এ নামাজ আদায় করবে, তার জন্য আল্লাহ তায়ালা বেহেশতের ভেতরে একটি উচু বালাখানা তৈয়ার করবেন। সে যেন সমস্ত মুসলমানের পক্ষে সদকা দিন। আল্লাহ পাক তাকে মাফ করে দেবেন।

বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছোয়াল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা রাকাআতাই ছলা-তিন নফলি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা নিয়্যাত

আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে দুরাআত নফল নামাজের নিয়্যত করলাম। আল্লাহু আকবার।

শুক্রবার দিবসের নফল নামাজ

হযরত মুজাহিদ রা. হযরত ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণনা করেছেন, জুমার দিনে যোহর ও আছরের মধ্যবর্তী সময় দুরাকাত নফল নামাজ পড়া যায়। তার প্রথম রাকাতে সূরা ফতিহার পর একবার আয়াতুল কুরসী ও ২৫ বার  সূরা ফালাক্ব এবং দ্বিতীয় রাকায়াতে একবার সূরা ইখলাছ ও ২০ বর সূরা ফালাক পড়তে হয়। নামাজ শেষে নিম্নের দোয়াটি ৫০ বার পড়তে হয়।

বাংলা উচ্চারণ: লা হাওলা ওয়া ল কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লা হিল আলিয়্যিল আযীম।

আরো পড়ুন: জুমার নামাজের নিয়ত

শনিবার রাতের নফল নামাজ

হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন এ রাতে যে কোন সময় ২০ রাকাত নামাজ পড়া যায়। এর প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে ৫০ বার সূরা ইখলাছ এবং একবার করে সূরা ফালাক ও নাস পড়তে হয়।

শনিবার দিবসের নফল নামাজ

হযরত সাঈদ রা. হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণনা করেছেন, শনিবার দিবসের ভেতরে যে কোন সময় চার রাকাআত নামাজ পড়া যায়। এ নামাজ এক সালামে পড়তে হয়।

এর প্রতি রাকাআতে সূরা ফাতিহার পরে তিন বার সূরা কাফিরূন মিলিয়ে পড়তে হয়। নামাজ শেষে আয়াতুল করসী পড়তে হবে। এ নামাযী ব্যক্তি এক বছর রোযা রাখার তুল্য ছাওয়ার লাভ করবে এবং একটি হজ্জ ও ওমরার সমান সওয়াব পাবে আর  কেয়ামতের দিন আরশের ছায়ায় নবী ও শহীদদের সঙ্গে স্থান লাভ করবে ।

নামাজ শেষে নিজের ও পিতা মাতার গুনাহ মার্জনার জন্য দোয়া করতে হবে।

রবিবার রাতের নফল নামাজ

হযরত আমস রা. হযরত আনাস রা. হতে বর্ণনা করেছেন, রবিবার রাতের মধ্যে যে কোন সময় এক নিয়্যতে চার রাকাআত নামজ পড়তে হবে। এ নামাজে প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে ১০ বার সূরা ইখলাস দ্বিতীয় রাকাআতে ২০ বার, তৃতীয় রাকাআতে ৩০ বার এবং চতুর্থ রাকাতে ৪০ বার পড়তে হবে।

নামাজের পরে সূরা ইখলাছ ৭৫ বার ইস্তিগফার ৭৫ বার এবং দুরূদ শরীফ ৭৫ বার পড়তে হবে। নামাযের পরে আল্লাহর নিকট গুণাহ মার্জনার জন্য প্রার্থনা করতে হবে। তিনি তার দিলের বাসনা পূর্ণ করে দেবেন।

রবিবার দিবসের নফল নামাজ

হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেছেন, রবিবার দিবসে যে কোন সয়ম এক নিয়্যতে চার রাকাত নামাজ আদায় করা যায়। এর প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে সূরা বাকারার আমানার রাসূলু হইতে আলাল ক্বাওমিল কাফিরীন পর্যন্ত পড়তে হয়।

এ নামাজীর আমল নাময় খৃষ্টানদের সংখ্যার তুল্য সওয়াব লিখা হবে আর একটি হজ্জ এবং একটি ওমরার তুল্য ছাওয়াব লিপিবদ্ধ করা হবে।

এটা ব্যতীত প্রতি রাকাতের বদলে এক হাজার রাকাতের তুল্য ছাওয়াব লিখা হবে এবং বেহেশতের ভিতরে এর প্রত্যেকটি অক্ষরের বদলে মেশকের শহর লাভ করবে। নামাজের পরে নিজের ও পিতা মাতার গুণাহ মার্জনার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করবে।

সোমবার রাতের বেলার নফল নামাজ

বর্ণিত আছে, এ রাতে কোন সময় ১২ রাকাত নামজ পড়া যায়। এর প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে ৫ বার করে সূরা নসর পড়তে হবে। এ নামাজ আদায়কারীকে আল্লাহ তাআলা বেহেশতের মধ্যে পৃথিবীর সমান সাতটি সহল দান করবেন।

সোমবার দিবসের নফল নামায

হযরত আবু জোবায়ের রা. হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. হতে বর্ণনা করেছেন, এ দিবসে চাশতের ওয়াক্ত দু রাকাত নামাজ পড়া যায়। তার প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে একবার করে আয়াতুল কুরসী , সুলা ইখলাছ, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস মিলিয়ে পড়তে হয়।

নামাজের পরে দশ বার ইস্তিগফার ও দশবার দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হয়। আল্লাহ পাক এ ব্যক্তির সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।

মঙ্গলবার রাতের নফল নামাজ

বর্ণিত আছে, মঙ্গলবার রাতে যে কোন সময় দুই রাকাত নামাজ পড়া যায়। এই নামাজের প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর দশ বার সূরা ফালাক্ব এবং দ্বিতীয় রাকাতে দশবার সূরা নাস পাঠ করতে হয়।

এ ব্যক্তির জন্য সত্তর সহস্র ফেরেশতা দুনিয়ায় অবর্তীর্ণ হয়ে কেয়ামত পর্যন্ত তার আমলনামায় সওয়াব লিখতে থাকবে।

মঙ্গলবার দিবসের নফল নামাজ

হযরত ইয়াজীদ রুফায়ী রা. হযরত আনাস রা. হতে বর্ণনা করেছেন, এ দিবসে চাশতের ওয়াক্তে দশ রাকাত নামাজ আদায় করা যায়। এ নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে একবার আয়াতুল কুরসী এবং তিনবার সূরা ইখলাছ পড়তে হয়।

এ ব্যাক্তির আমল নামায় সত্তর দিবস পর্যন্ত কোন গুনাহ লিপিবদ্ধ করা হবে না। আর ঐ ব্যক্তি এ দিবসে মুত্যুবরণ করলে তাকে আল্লাহ তায়ালা শহীদী দরজা প্রদান করবেন এবং তাহার সত্তর বৎসরের পাপ মোচন করে দেবেন।

বুধবার রাতের নফল নামাজ

হযরত আবু সালেহ রা. হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণনা করেছেন, এ রাতে মাগরিব ও এশার ওয়াক্তের মধ্যবর্তী সময় দুরাকাত নামায পড়া যায়। এ নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর পাচ বার করে আয়াতুল কুরসী, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস পড়তে হবে।

পনের বার ইস্তিগফার পড়ে এর সওয়াব মাতা পিতার রুহের প্রতি বখশিশ করে দেবে। এর দ্বারা মাতা পিতার হক আদায় হয়ে যাবে। আল্লাহ আয়ালার এ ব্যক্তিকে সিদ্দীকীন ও শহীদানের তুল্য ছাওয়াব প্রদান করবেন ইনশাআল্লাহ। 

বুধবার দিবসের নফল নামাজ

হযরত আবু ইদ্রিস খাত্তালানী রা. বর্ণনা করেছেন, এ দিবসে চাশতের ওয়াক্তে বার রাকাত নফল নামাজ আদায় করা যায়। প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর একবার আয়াতুল করসী এবং তিন বার করে সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক্ব, ও সূরা নাস পড়তে হয়। আসমানের ফেরেশতারা এ নামাযীকে ডেকে বলে, আপনি নতুনভাবে ইবাদত আরম্ভ করুন।

আপনার পূর্ববর্তী গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। আল্লাহ পাক তার কবর আজাব ও সংকীর্ণতা এবং আদ্ধকার দূর করে দেবেন। তার আমলনামা নবীদের আমলনামার ন্যায় দেখা যাবে। আল্লাহ পাক কেয়ামতের দিন তার আজাব মাফ করে দেবেন।

বৃহস্পতিবার রাতের নফল নামাজ

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. বর্ণনা করেছেন, এ রাতে মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময় বার রাকাত নফল নামাজ পড়া যায়। এর প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে দশবার করে সূরা ইখলাছ মিলিয়ে পড়তে হয়।

এ নামাযী ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা বার বছরের রোযার তুল্য এবং বার বছরের রাত ইবাদতের তুল্য ছাওয়াব দান করবেন।

আরো পড়ুন: জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *