নামায পড়ার নিয়ম

Share this

যখন কেউ নামায পড়ার ইচ্ছা করবে তখন প্রথমে তাকে নামাযের শর্তগুলাে অর্থাৎ নামায শুরু করার পূর্বে যে ৭টি ফরজ এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে যে এর মধ্যে কোনটা যাতে বাদ না যায়।

তারপর একনিষ্ঠতার সাথে তাকে মনে করতে হবে যে, সে যেন মহান আল্লাহ্র সামনে দাঁড়িয়েছে। তারপর দৃষ্টি সিজদার স্থানে রেখে তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ

“আল্লাহু আকবর” বলে দু’হাত কানের লতি পর্যন্ত উঠাবে। এর পরে দু’হাত নাভীর নীচে এমন ভাবে বাঁধবে যেন ডান হাতের হাতুলি বাম হাতের পিঠের উপর থাকে এবং ডান হাতের বৃদ্ধা ও কনিষ্ঠা আঙ্গুলী দ্বারা বাম হাতের কজি শক্ত করে ধরে ডান হাতের বাকী আঙ্গুলগুলাে বাম হাতের উপর বিছিয়ে রাখবে।

এরপর ছানা অর্থাৎ সুবানাকা….(পুরা) পাঠ করে তারপর আউজু বিল্লাহ….(পুরা) এবং বিমিল্লাহ… (পুরা) পড়ে সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। সূরা ফাতিহার শেষে চুপে চুপে আমীন বলবে। অতঃপর সূরা ফাতিহার সাথে যে কোন একটি সূরা অথবা কয়েকটি আয়াত মিলিয়ে পড়বে।

তারপর “আল্লাহু আকবর” বলে রুকুতে যাবে। রুকুতে হাত হাটুর উপর রেখে আঙ্গুল দিয়ে হাটু ধরবে এবং তিনবার অথবা পাঁচবার কিংবা সাতবার রুকুতে তাসবীহ্ অর্থাৎ “সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম” পড়বে। তারপর “সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা” বলে রুকু থেকে উঠে

দাড়িয়ে বলবে “রাব্বানা লাকাল হামদ” জমাতে নামাযের সময় ইমাম “সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা” বলে যখন রুকু থেকে উঠে দাঁড়াবে তখন মুকতাদী শুধু রাব্বানা লাকাল হামদ্ বলে রুকু থেকে উঠে দাঁড়াবে।

 আর দাঁড়ানাের সময় একেবারে সােজা হয়ে দাঁড়াতে হবে, অতঃপর তাকবীর অর্থাৎ “আল্লাহু আকবর” বলে সিজদায় যাবে । সিজদায় তিন, পাঁচ কিংবা সাতবার সিজদার তাসবীহ অর্থাৎ “সুবহানা রাব্বিয়াল ‘আলা” পড়বে।

আরো পড়ুন: নামাজের প্রতিদান ও ফজিলত

তারপর “আল্লাহু আকবর” বলে মাথা উঠায়ে সােজা হয়ে বসবে। তারপর দু’সিজদার মধ্যে পড়ার দু’আ পাঠ করবে। এরপর দ্বিতীয় সিজদায় যাবে এবং সিজদার তাসবীহ পাঠ করে সােজা উঠে দাঁড়াবে।

এভাবে এক রাকাত নামায পূর্ণ হল, অনুরূপ ভাবে দ্বিতীয় রাকাত আদায় করে বসবে এবং “তাশাহহুদ” অর্থাৎ “আত্তাহিয়্যাতু” পাঠ করবে। নামায যদি দু’রাকাত ওয়ালা হয় তাহলে তাশাহহুদের পর দরূদ এবং দু’আ মা-ছুরা পাঠ করে ডানে-বামে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবে।

আর নামায যদি তিন অথবা চার রাকাত ওয়ালা হয় তাহলে দ্বিতীয় রাকাতের পর বসে “আত্তাহিয়্যাতু” পড়ে “আল্লাহু আকবর” বলে দাঁড়িয়ে তিন রাকা’তের এক রাকাত কিংবা চার রাকাতের দু’রাকাত উপরােক্ত নিয়ম অনুযায়ী আদায় করে শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু দরুদ ও দু’আ মা-ছুরা পড়ে ডানে বামে সালাম ফিরায়ে নামায শেষ করবে।

তিন ও চার রাকাত ওয়ালা নামযে তৃতীয় এবং চতুর্থ রাকাতে ফরজ নামাযে সূরা ফতিহার সাথে আর কোন সূরা বা আয়াত মিলায়ে পড়তে হয় না।

ইহা শুধু সুন্নাত ও নফল নামাযে পড়া হয় । বিতরের নামাযের শেষ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে যে কোন একটি সূরা মিলায়ে পড়ে তাকবীর “আল্লাহু আকবর” বলে দু’হাত কান পর্যন্ত উঠায়ে প্রথমের ন্যায় পুনরায় নাভীর উপর হাত বেঁধে দু’আ কুনূত পাঠ করে যথা নিয়মে নামায শেষ করবে।

মহিলাদের নামাযের পদ্ধতিগত পার্থক্য

নামাযের নিয়ম পদ্ধতি মৌলিকভাবে পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। তবে মহিলাদের নামাযে কয়েকটি দিক ব্যতিক্রম আছে। যেমন-  মহিলারা তাকবীরে তাহরীমার সময় হাত শুধু কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে এবং বুকের উপর হাত বাঁধবে,

আর ডান হাতের হাতুলি বাম হাতের হাতুলির পিঠের উপর রাখবে।

মহিলারা রুকূতে শুধু এতটুকু ঝুঁকে পড়বে যেন দু’হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছে। হাঁটু আঙ্গুল দিয়ে ধরার পরিবর্তে শুধু মেলানাে আঙ্গুলগুলাে হাঁটুর উপর রাখবে। সিজদার সময় মহিলারা পেট উরুর সাথে এবং বাহু বগলের সাথে মিলিয়ে কুনই পর্যন্ত হাত এবং পা বিছিয়ে রাখবে।

তাশাহহুদ অর্থাৎ আত্তাহিয়্যাতু পড়ার বৈঠকে কিংবা নামাযের শেষ বৈঠকে দু’পা ডান দিক করে বাম পার্শ্বের উপর বসবে । মহিলারা সর্বদা নিঃশব্দে কিরাত পড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *