বিদ্রোহী কবিতা
Share this
“বিদ্রোহী” কাজী নজরুল ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা এবং বাংলা সাহিত্যের এক যুগান্তকারী সৃষ্টি। বিদ্রোহী কবিতা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২২ সালের ৬ জানুয়ারি, কলকাতার বিজলী পত্রিকায়। পরে এটি মাসিক প্রবাসী পত্রিকা, মাসিক সাধনা পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যা, এবং নজরুলের নিজ সম্পাদিত পত্রিকা ধূমকেতুতে প্রকাশিত হয় ২২ আগস্ট ১৯২২ সালে।
বিদ্রোহী কবিতার প্রতিটি পঙ্ক্তিতে প্রবল শক্তি ও গতির প্রকাশ ঘটে। এতে কবি কখনও নিজেকে আগুন, কখনও ঝড়, কখনও বজ্র বা সমুদ্রের ঢেউ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।বিদ্রোহী কবিতা প্রকাশের সময় ভারত ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল। কবিতাটি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির মানসিকতা এবং সংগ্রামী চেতনায় দারুণ প্রভাব ফেলেছিল।
“বিদ্রোহী” শুধু কবিতার পাঠক নয়, সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান করে নিয়েছে। নিচে কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা এবং এর মূলভাব বর্ণনা করা হয়েছে-
বিদ্রোহী কবিতা
কাজী নজরুল ইসলাম
“বল বীর –
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর –
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
বল বীর –
আমি চির উন্নত শির!
আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস!
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর,
আমি দুর্বার,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার!
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!
আমি মানি না কো কোন আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!
আমি ধূর্জটি, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর
আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!
বল বীর –
চির-উন্নত মম শির!
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি,
আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’।
আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,
আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ।
আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল,
আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’
পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’
ফিং দিয়া দিই তিন দোল;
আমি চপলা-চপল হিন্দোল।
আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা,
করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা,
আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা!
আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর;
আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর!
বল বীর –
আমি চির উন্নত শির!
আমি চির-দুরন্ত দুর্মদ,
আমি দুর্দম, মম প্রাণের পেয়ালা হর্দম হ্যায় হর্দম ভরপুর মদ।
আমি হোম-শিখা, আমি সাগ্নিক জমদগ্নি,
আমি যজ্ঞ, আমি পুরোহিত, আমি অগ্নি।
আমি সৃষ্টি, আমি ধ্বংস, আমি লোকালয়, আমি শ্মশান,
আমি অবসান, নিশাবসান।
আমি ইন্দ্রাণী-সুত হাতে চাঁদ ভালে সূর্য
মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর রণ-তূর্য;
আমি কৃষ্ন-কন্ঠ, মন্থন-বিষ পিয়া ব্যথা-বারিধীর।
আমি ব্যোমকেশ, ধরি বন্ধন-হারা ধারা গঙ্গোত্রীর।
বল বীর –
চির – উন্নত মম শির!
আমি সন্ন্যাসী, সুর-সৈনিক,
আমি যুবরাজ, মম রাজবেশ ম্লান গৈরিক।
আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস,
আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ!
আমি বজ্র, আমি ঈশান-বিষাণে ওঙ্কার,
আমি ইস্রাফিলের শিঙ্গার মহা হুঙ্কার,
আমি পিণাক-পাণির ডমরু ত্রিশূল, ধর্মরাজের দন্ড,
আমি চক্র ও মহা শঙ্খ, আমি প্রণব-নাদ প্রচন্ড!
আমি ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, বিশ্বামিত্র-শিষ্য,
আমি দাবানল-দাহ, দাহন করিব বিশ্ব।
আমি প্রাণ খোলা হাসি উল্লাস, – আমি সৃষ্টি-বৈরী মহাত্রাস,
আমি মহা প্রলয়ের দ্বাদশ রবির রাহু গ্রাস!
আমি কভূ প্রশান্ত কভূ অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী,
আমি অরুণ খুনের তরুণ, আমি বিধির দর্পহারী!
আমি প্রভোন্জনের উচ্ছ্বাস, আমি বারিধির মহা কল্লোল,
আমি উদ্জ্বল, আমি প্রোজ্জ্জ্বল,
আমি উচ্ছ্বল জল-ছল-ছল, চল-ঊর্মির হিন্দোল-দোল!
আমি বন্ধন-হারা কুমারীর বেণু, তন্বী-নয়নে বহ্ণি
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!
আমি উন্মন মন উদাসীর,
আমি বিধবার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস, হা হুতাশ আমি হুতাশীর।
আমি বন্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের,
আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বিষ – জ্বালা, প্রিয় লান্চিত বুকে গতি ফের
আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়
চিত চুম্বন-চোর কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর!
আমি গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল-ক’রে দেখা অনুখন,
আমি চপল মেয়ের ভালোবাসা, তা’র কাঁকন-চুড়ির কন-কন!
আমি চির-শিশু, চির-কিশোর,
আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচড় কাঁচলি নিচোর!
আমি উত্তর-বায়ু মলয়-অনিল উদাস পূরবী হাওয়া,
আমি পথিক-কবির গভীর রাগিণী, বেণু-বীণে গান গাওয়া।
আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা, আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি
আমি মরু-নির্ঝর ঝর ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়া-ছবি!
আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি, এ কি উন্মাদ আমি উন্মাদ!
আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!
আমি উথ্থান, আমি পতন, আমি অচেতন-চিতে চেতন,
আমি বিশ্ব-তোরণে বৈজয়ন্তী, মানব-বিজয়-কেতন।
ছুটি ঝড়ের মতন করতালি দিয়া
স্বর্গ মর্ত্য-করতলে,
তাজী বোররাক আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার
হিম্মত-হ্রেষা হেঁকে চলে!
আমি বসুধা-বক্ষে আগ্নিয়াদ্রি, বাড়ব-বহ্ণি, কালানল,
আমি পাতালে মাতাল অগ্নি-পাথার-কলরোল-কল-কোলাহল!
আমি তড়িতে চড়িয়া উড়ে চলি জোর তুড়ি দিয়া দিয়া লম্ফ,
আমি ত্রাস সন্চারি ভুবনে সহসা সন্চারি’ ভূমিকম্প।
ধরি বাসুকির ফণা জাপটি’ –
ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনের পাখা সাপটি’।
আমি দেব শিশু, আমি চঞ্চল,
আমি ধৃষ্ট, আমি দাঁত দিয়া ছিঁড়ি বিশ্ব মায়ের অন্চল!
আমি অর্ফিয়াসের বাঁশরী,
মহা- সিন্ধু উতলা ঘুমঘুম
ঘুম চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝঝুম
মম বাঁশরীর তানে পাশরি’
আমি শ্যামের হাতের বাঁশরী।
আমি রুষে উঠি’ যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,
ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া!
আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অখিল ব্যাপিয়া!
আমি শ্রাবণ-প্লাবন-বন্যা,
কভু ধরনীরে করি বরণীয়া, কভু বিপুল ধ্বংস-ধন্যা-
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ণু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা!
আমি অন্যায়, আমি উল্কা, আমি শনি,
আমি ধূমকেতু-জ্বালা, বিষধর কাল-ফণী!
আমি ছিন্নমস্তা চন্ডী, আমি রণদা সর্বনাশী,
আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি!
আমি মৃন্ময়, আমি চিন্ময়,
আমি অজর অমর অক্ষয়, আমি অব্যয়।
আমি মানব দানব দেবতার ভয়,
বিশ্বের আমি চির-দুর্জয়,
জগদীশ্বর-ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,
আমি তাথিয়া তাথিয়া মাথিয়া ফিরি স্বর্গ-পাতাল মর্ত্য!
আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!!
আমি চিনেছি আমারে, আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!!
আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার
নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!
আমি হল বলরাম-স্কন্ধে
আমি উপাড়ি’ ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে।
মহা-বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না –
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না –
বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন,
আমি স্রষ্টা-সূদন, শোক-তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!
আমি খেয়ালী-বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!
আমি চির-বিদ্রোহী বীর –
বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির!”
কাজী নজরুল ইসলামের “বিদ্রোহী” কবিতা কেবলমাত্র তার সময়ের প্রেক্ষাপটেই নয়, বরং এটি আজও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে যে চিরন্তন প্রতিবাদী মানসিকতা, সেটিই কবিতাটির প্রধান বার্তা।
আরো পড়ন: দোয়া কবুল হওয়ার আমল
বিদ্রোহী কবিতা পিডিএফ:
কাজী নজরুল ইসলাম মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিদ্রোহী চেতনা এবং শোষণ, অবিচার, ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাগ্রত সাহস। কবিতার এই দৃপ্ত উচ্চারণের জন্য নজরুলের মধ্যে “বিদ্রোহী কবি” সত্তা ফুটে ওঠে।
বিদ্রোহী কবিতার মূলভাব
কবিতাটির কেন্দ্রীয় ভাবনা হলো অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। কবি নিজেকে একজন বিদ্রোহী রূপে উপস্থাপন করেছেন, যিনি সমাজের সকল বাধা, শৃঙ্খল, এবং কুসংস্কার ভেঙে এগিয়ে চলেন।কবিতায় কবি ধর্ম, বর্ণ, জাতি বা সম্প্রদায়ভেদ অস্বীকার করে মানবতার মুক্তির কথা বলেছেন। তিনি সর্বজনীন সাম্যের আহ্বান করেছেন।
কবি নিজেকে প্রকৃতির বিভিন্ন শক্তির রূপে কল্পনা করেছেন—আগুন, ঝড়, বজ্রপাত, সমুদ্রের ঢেউ। কবিতায় আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা, এবং আত্মমর্যাদার চেতনাও গভীরভাবে প্রকাশিত হয়েছে।”বিদ্রোহী” কবিতার মূলভাব হলো মানবমুক্তির জন্য আপসহীন সংগ্রামের ডাক। এটি শুধু কবির নিজের বিদ্রোহী মানসিকতার প্রকাশ নয়, বরং সমস্ত শোষিত মানুষের মুক্তি ও আত্মসম্মানের প্রতীক।
কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলা হয় কেন
কাজী নজরুল ইসলামকে “বিদ্রোহী কবি” বলা হয় তার কবিতা, গান, প্রবন্ধ এবং জীবনাচরণের মাধ্যমে প্রকাশিত দৃপ্ত প্রতিবাদী মনোভাব ও বিদ্রোহী চেতনার কারণে। তিনি শোষণ, অন্যায়, এবং সমাজের কুসংস্কার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার লেখনীতে যেমন তীব্র প্রতিবাদ করেছেন, তেমনই জীবনে তা বাস্তবায়ন করতেও সংকল্পবদ্ধ ছিলেন।
- “বিদ্রোহী” শুধুমাত্র একটি কবিতা নয়, এটি বাঙালির মুক্তি, স্বাধীনতা ও আত্মসম্মানের প্রতীক। কবিতাটি আজও বাঙালির সংগ্রামী চেতনায় “চির উন্নত শির” হয়ে বিরাজমান।
- নজরুল তার রচনায় সমাজের সকল প্রকার শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরাসরি বিদ্রোহ করেছেন।
- তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ, সামন্ততান্ত্রিক শাসন, এবং ধর্মীয় গোঁড়ামির তীব্র সমালোচনা করেছেন।
- তার সৃষ্টিতে সাম্য ও মানবিকতার কথা প্রাধান্য পেয়েছে।নজরুল তার “ধূমকেতু” পত্রিকার মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের তীব্র সমালোচনা করেন।
- নজরুল ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি সব ধর্মের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
কাজী নজরুল ইসলাম কেবল তার কবিতায় নয়, তার জীবনাচরণে, চিন্তায়, এবং কর্মে বিদ্রোহী। তিনি শোষিত-নিপীড়িত মানুষের মুক্তির প্রতীক, সাম্যের অগ্রদূত এবং মানবতার জাগরণের পথিকৃৎ। এই বিদ্রোহী চেতনাই তাকে “বিদ্রোহী কবি” উপাধি দিয়েছে এবং তাকে বাংলা সাহিত্যে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে।
আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানুষ কে
কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দেন কে
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম অগ্রগণ্য কবি কাজী নজরুল ইসলামকে “বিদ্রোহী কবি” উপাধি প্রদান করেন অধ্যাপক মালিক মোহাম্মদ। তার বিপ্লবী মানসিকতা, সাহসী সাহিত্যকর্ম এবং শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে জাগ্রত প্রতিবাদের কারণে এই উপাধি নজরুলের জীবনে এক বিশেষ স্বীকৃতি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য ছিল শোষণ, সাম্প্রদায়িকতা, এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে এক তীব্র প্রতিবাদ।
তার সাহিত্যে বারবার শোষিত মানুষের মুক্তি ও সাম্যের বার্তা উঠে এসেছে।ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তার প্রতিবাদ ছিল অদম্য। “ধূমকেতু” পত্রিকার মাধ্যমে তিনি ব্রিটিশ শাসনের সমালোচনা করেন, যার ফলে তাকে কারাবরণ করতে হয়। তার সাহসী ভূমিকা তাকে বিপ্লবী কবি হিসেবে পরিচিতি এনে দেয়।
আরো পড়ুন: ইসলামে নারীর অধিকার
বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি
মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার সাহসী সাহিত্যিক এবং সামাজিক অবস্থানের জন্য আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তন করেন এবং চতুর্দশপদী কবিতা বা সনেট রচনার মাধ্যমে সাহিত্যক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। তার এই সৃষ্টিশীল বিদ্রোহ বাংলা সাহিত্যে একটি আধুনিকতাবোধ এনে দিয়েছিল।