ইসলাম

ইসলামে নারীর অধিকার

Share this

নারী সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গী

প্রাক ইসলামী যুগে নারীগণকে এ জগত শুধু অনুপোকারীই নয় বরং সভ্যতার কলঙ্ক ও জঞ্জাল মনে করে জীবনের কর্মময় ময়দান থেকে হটিয়ে দিয়ে হীনতা নীচুতা ও লাঞ্ছনা গঞ্জনার এমন অন্ধকারময় কুয়ার অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করে ছিলো, যেখান থেকে উঠে এসে জীবনে উন্নতি লাভ করার আর কোন |

আশাই ছিল না। ইসলাম নারীদের প্রতি জগতবাসীর এহেন অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠে কঠোর প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেছে এবং পরিষ্কার রূপে ঘোষণা দিয়েছে যে, এ পার্থিব জীবনে নারী-পুরুষ একে অপরের মুখাপেক্ষী। নারীগণকে শুধু লাঞ্ছিত ও অবহেলিত রাখার জন্য এবং তাদেরকে জীবনের প্রশস্তময় রাজপথ হতে কণ্টকের ন্যায় দূরে নিক্ষেপ করার জন্য সৃষ্টি করা হয়নি।

কেননা পুরুষের সৃষ্টির পেছনে যেমন প্রকৃতির একটি মহান উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে, তেমনি নারী সৃষ্টির মূলেও রয়েছে তার এক সুমহান উদ্দেশ্য । প্রকৃতি তাদের উভয় শেণী দ্বারাই তার বাঞ্চিত উদ্দেশ্যকে পূর্ণ করতে চায়। কুরআন মজীদে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন : “আকাশ ও পৃথিবীর সার্বভৌম মালিকানা আল্লাহ তায়ালার ।

তিনি যা ইচ্ছে তা সৃষ্টি করেন। যাকে ইচ্ছে তিনি ছেলে যাকে ইচ্ছে মেয়ে দান করেন । অথবা যাকে ইচ্ছে ছেলে ও মেয়ে এক জোড়া সন্তান দেন । আবার যাকে ইচ্ছে নিঃসন্তান করে বন্ধ্যা বানিয়ে রাখেন। নিঃসন্দেহে তিনি মহাজ্ঞানী ও মহা শক্তিশালী সত্তা।” (সূরা শুরু ৪৯-৫০)

নের ইসলাম নারীদেরকে নীচুতা হীনতা ও অবমাননার অন্ধকারময় কূপ হতে হাত ধরে উঠিয়ে সমাজ জীবনে সর্বময় অধিকার দান করে পূনঃ প্রতিষ্ঠিত করেছে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেনঃ “আমরা হযরত রাসূলে করীম (সাঃ)-এর যমানায় নিজ নারীদের সাথে কথাবার্তা বলতে এবং দ্বিধাহীন ব্যবহার প্রদর্শন করতে ভয় পেতাম।

কারণ না জানি আমাদের সম্পর্কে আল্লাহর কোন অহী নাযিল হয় । নবী করীম (সাঃ)-এর ইনতেকালের পর হতে আমরা তাদের সাথে দ্বিধাহীন চিত্তে ও অসংকোচে জীবন যাপন করতে থাকি । (বুখারী, ইবনে মাজা)

এ অত্যাচারিত অবহেলিত মজলুম শ্রেণীটির এ পার্থিব জগতে জীবিত থাকারও অধিকার ছিল না। আল কুরআন এসে দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করলোএরা এ জগতে জীবিত থাকার জন্য এসেছে, এদেরকে জীবিত কবর দেয়া চলবে না ।

এদের অধিকারের উপর যে লোকই হস্তক্ষেপ করুক না কেন, তাকেই আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে। ইরশাদ হচ্ছে, “যখন জীবিত কবর দেয়া মেয়েদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে যে, কি অপরাধে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে ?” (সূরা তাকবীর)

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) এ অত্যাচারিত অবহেলিত মজলুম শ্রেণীটির জন্য যেরূপ সাহায্যের হস্ত সম্প্রসারিত করে ছিলেন এবং যে শিক্ষাবলী ও আদর্শ স্থাপন করেছেন, আজ পর্যন্ত দুনিয়ার কোন সংস্কারক বা তথাকথিত মহামানব ও নারী অধিকারের দাবীদার সুধীজন এমন আদর্শ ও শিক্ষার নজীর পেশ করতে পারেনি। তিনি দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন :

“মাতার অবাধ্যগত হওয়া, অধিকার আদায় করা থেকে বিরত রাখা, ধন সম্পদ স্তূপীকৃত করে রাখা এবং মেয়েদেরকে জীবিত কবর দেয়াকে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করেছেন।” (বুখারী)

ইবনে আব্বাসের বর্ণনা, নবী করীম (সাঃ) বলেছেন।যদি কোন লোকের মেয়ে হয়, তবে সে মেয়েকে জীবিত কবর দিবে না এবং তার সাথে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য মূলক ব্যবহারও দেখাবে না । আর মেয়ের উপর ছেলেকে প্রাধান্য দেবে না। তা-হলেই আল্লাহ তায়ালা তাকে বেহেস্তে দাখিল করবেন। (আবুদাউদ, মুস্তাদরেক)

আরো পড়ুন:- স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা বৃদ্ধির দোয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *