ইসলাম

ইসলামের স্তম্ভ কয়টি ও কি কি

Share this

ইসলামের স্তম্ভ পাঁচটি যথা-

(১) ঈমান

(২) নামায

(৩) রোযা

(৪) হজ্জ ও

(৫) যাকাত ।

ফেরেশতা

ফেরেশতাগণ আল্লাহ তা’আলার এক বিশেষ সৃষ্টি। তারা আল্লাহ্র নূর দ্বারা তৈরি । আল্লাহর হুকুম পালন করা এবং তার গুণগান ও পবিত্রতা বর্ণনা করাই তাদের একমাত্র কাজ। তারা আল্লাহর আদেশ অমান্য করা কিংবা অবাধ্য হওয়ার কোন কারণ নেই ।

তারা পুরুষ কিংবা স্ত্রী কোনটাই নয়, তাদের পানাহারের কোন প্রয়োজন নেই, কাজেই তাদের পায়খানা-প্রস্রাবেরও দরকার হয় না । তাদের তন্দ্রা বা নিদ্রাও নেই ।

আসমানী কিতাব

আসমানী কিতাবসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ফরজ। আল্লাহ তা’আলা মানুষ সুষ্টি করে দুনিয়ায় পাঠিয়ে ক্ষান্ত হননি, বরং তাদের পথ প্রদর্শক হিসেবে যুগে যুগে নবী-রাসুলগণকে পাঠিয়েছেন।

আবার নবীদের নিকট তাঁর বান্দাদেরকে অন্ধকার হতে বের করে আলোর পথ দেখানোর জন্য কিতাব বা তাঁর বাণী জিব্রাঈল (আঃ) ফেরেশতার মারফত অবতীর্ণ করেছেন।

রাসূলগণ এই বাণী মানব কূলের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন। এই সমস্ত কিতাব আল্লাহ তা’আলা মানুষের কল্যাণের জন্য জীবন বিধান হিসেবে পাঠিয়েছেন, এটা বিশ্বাস করা ঈমানের অঙ্গ।

কিয়ামত

শেষ বিচার দিনের উপর বিশ্বাস করাও ঈমানের বিশেষ একটি অঙ্গ। এখানে (দুনিয়ায়) যা কিছু আছে সবই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা জ্বিন ও ইনসানের মাঝে ন্যায়-বিচার কায়েম করবেন।

এর নামই “ইয়াওমুল আখিরাত বা শেষ বিচারের দিন । এর প্রতি ঈমান আনা মানব-দানব প্রত্যেকের উপর ফরজ। সেদিন সকল মৃতকে কবর হতে উঠান হবে এবং সকলের পাপ-পূণ্য মীযান বা পাল্লায় তুলে পরিমাপ করা হবে।

যারা এতে মুক্তি পাবে অর্থাৎ নেক আমলের পাল্লা ভারী হবে। তারা আল্লাহ প্রতিশ্রুতি অনন্ত সুখের বেহেশতে গমণ করবে। আর যাদের গুনাহর পাল্লা ভারী হবে তারা গুনাহ পরিমাণ শাস্তি ভোগ করবে।

তকদীর

তকদীর বা অদৃষ্টের প্রতি বিশ্বাস করা ঈমানের বিশেষ অঙ্গ । সাধারণ মানুষের পক্ষে এ বিষয়টি বুঝে উঠা কঠিন। মোটামুটি এতটুকু ঈমান আনতে হবে যে, আল্লাহ অদৃষ্টে যা নির্ধারণ করেছেন তার পরিবর্তন ঘটবে না।

তবে মানুষকে আল্লাহর হুকুম-আহকাম অবশ্যই পালন করে চলতে হবে। এ বিষয়ে এতটুকু জ্ঞান রাখাই যথেষ্ট যে সকল কিছু তাঁর তরফ থেকেই হয় ।

পুনরুত্থান

মৃত্যুর পরে পুনরুত্থান এবং পুনর্জীবন লাভ করার প্রতি ঈমান আনতে হবে। কাফেররা বলত, মৃত্যুর পরে অস্থি-মাংস পঁচে মাটির সাথে মিশে যাবে ।

পুনরায় জীবিত হতে হবে না এবং কোন হিসাব বা বিচারও হবে না। তাদের সেই ধারণা ছিল ভুল। আল্লাহ কেয়ামতের দিন সকল মৃত ব্যক্তিকে উত্থিত করবেন এবং প্রত্যেক ভাল- মন্দ তাআলা বলেন- কাজের হিসাব গ্রহণ করবেন । অর্থাৎ সৎকাজের পুরস্কারস্বরূপ বেহেশত । যেমন,

-সূরা লোকমানঃ ৮ । অর্থঃ যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামত ভরা

আল্লাহ তাআলা বলেন- এবং পাপ কর্মের প্রতিফলস্বরূপ জাহান্নামের আযাব নির্ধারণ করবেন। অন্য আয়াতে

অর্থঃ যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে তারাই হবে জাহান্নামী; অনন্তকাল সেখানে থাকবে। মানুষ মাত্রেই কবরস্থ হওয়ার পর হাশর ময়দানে হাজির হতে হবে।

যেমনঃ আল্লাহ বলেন-

অর্থঃ মাটি হতে তোমাদেরকে পয়দা করেছি, মাটিতেই তোমাদের ফিরিয়ে দিব মাটির মধ্য হতে আবারও তোমাদেরকে বের করবো। -ত্বোহাঃ ৫৫।

অর্থঃ যখন সিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখন সকল আপন আপন কবর হতে উঠে পরওয়ারদেগারের দরবারের দিকে যেতে থাকবে। -সূরা ইয়াসীনঃ ৫১ ।

আল্লাহ বলেন,

অর্থঃ সেই দিনটির আগমন সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। যেদিন আল্লাহ তায়ালা তোমাদের সকলকে অবশ্যই একত্রিত করবেন।

মৃত্যুবরণ

জীবনের অনিবার্য পরিণতি একমাত্র মৃত্যু। মৃত্যুর হাত থেকে ছোট-বড়, ধনী, দরিদ্র, রাজা-প্রজা কারো নিস্তার নেই। পৃথিবীর বুকে পূর্বে যারা ছিল, এখন তারা নেই ।

আজ যারা আছে, ভবিষ্যতে তারাও থাকবে না । এমনিভাবে অবশেষে সকলেই মৃত্যুর কবলে পতিত হবে। তারপরই আরম্ভ হবে মানুষের সত্যিকার জীবন।

দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনে আমরা মুসাফির। এই প্রবাস জীবনে কিছু নেক আমল ও পরকালের পাথেয় সঞ্চয়ের জন্যই আমরা প্রেরিত হয়েছে।

মৃত্যুর মাধ্যমে এই মুসাফিরী জীবনের অবসান ঘটবে তারপর আদি-মাবন হতে সর্বশেষ মানব পর্যন্ত সকলকে একই দিন বিশেষ ঘোষণা ধ্বনির মাধ্যমে কবর হতে পুনরুত্থিত করা হবে ।

আরো পড়ুন:- নামাজ কি এবং কেন পড়বেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *