কুফরি কাকে বলে
Share this
আল্লাহ তায়ালা, নবী-রাসূলগণ, ফেরেশতাগন, আসমানী কিতাবসমূহ মৃত্যুর পরে পুনরুত্থান, কেয়ামতের দিন আমল অনুসারে বিচার-আচার, বিচারের পরে নেককার বান্দা জান্নাতী এবং বদকার গুনাহগার বান্দা জাহান্নামী হবে, এ সকল বিষয়াদি অবিশ্বাস করাকে কুফরী বলে ।
কুফরী ও শিরকের ভেতরে পার্থক্য হল, কাফেরগণ আল্লাহ তায়ালা ও রাসূলগণকে বিশ্বাস করে না অথবা আসমানী কিতাবকে বিশ্বাস করে না। কিন্তু মুশরিকরা আল্লাহকে মানার সাথে সাথে অন্যান্য বস্তুকে মাবুদ বা উপাস্য হিসাবে গ্রহণ করে থাকে।
অর্থাৎ আল্লাহকে একচ্ছত্র মাবূদ মানে না বরং অন্যকে তাঁর সাথে শরীক করে। শিরক হতেও কুফরী জঘন্য ও বড় গুনাহ এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। তবে খাছ দিলে তাওবা করতঃ ঈমান গ্রহণ না করা পর্যন্ত কুফরী ও শিরকী গুনাহ মাফ হবে না ।
আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন-
إنّ اللهَ لا يَغْفِرُ أَن يَشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ
অর্থ : নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাঁর সাথে শিরক করার অপরাধ মার্জনা করবেন না । এতদ্ব্যতীত অন্য যে কোন গুনাহ যাকে ইচ্ছা তিনি মার্জনা করতে পারেন। নেসা-৭২।
অন্য এক আয়তে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন-
مَنْ تُشْرِكَ بِاللّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَه الجَنَّةَ وَمَاؤُهُ النَّارُ .
অর্থঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার সাথে শরীক করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন । আর জাহান্নামই তার একমাত্র ঠিকানা । মায়েদাঃ ৭২। রাসূলে (সাঃ) বলেন,
شَرِكُ بِاللهِ وَإِنْ قُتِلتَ اَوْ حُرٌ لاتـ
অর্থ : যদিও তোমাকে কতল (হত্যা) করা হয় বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়, তবু আল্লাহ তায়ালার সাথে শরীক করো না ।
শিরকের প্রকারভেদ
শিরক দুই প্রকার-শিরকে জলী আর শিরকে খফী। তার বিস্তারিত আলোচনা নিম্নে দেয়া হল-
(১) শিরকে জলী : ‘জলী অর্থ প্রকাশ্য বা সরাসরি। অতএব প্রকাশ্য বা সরাসরিভাবে দেব-দেবী, মূর্তি, চন্দ্র, সূর্য, আগুন, নক্ষত্র ইত্যাদি কোন বস্তুকে আল্লাহ তাআলার সাথে শরীক করা বা মাবুদ ধারণা করাকে শিরকে জলী বলে । এহেন শেরক এর গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এমনকি, যারা এই রকমের শেরকী গুনাহ করে, তাদের জন্য দোয়া করাও অন্যায় ।
(২) শিরকে খফী : ‘খফি’ শব্দের অর্থ অপ্রকাশ্য বা গোপন। এই প্রকার শিরক ঈমানদার ব্যক্তিরা অজ্ঞতার কারণে করে থাকে। আল্লাহ তা’আলার যে গুণাবলী বা ছিফাত রয়েছে অপর কাউকে ঐ গুণাবলীর অধিকারী বলে বিশ্বাস করাকে শিরকে খফী’ বলে । এটি অতি সূক্ষ্ম বলে সাধারণ ঈমানদার বান্দারা উপলদ্ধি করতে না পেরে অনেক সময় এই অপরাধে অপরাধী হয়ে থাকে ।
আল্লাহ তাআলা পাক কোরআনে এরশাদ করেন-
مَا يُؤْمِنُ اكثرهُم بِاللهِ وهُم مَشرِكـ
অর্থ : তাদের মধ্যে যারা আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান এনেছে তাদের মধ্যে অধিকাংশই ‘মুশরিক’।
আরো পড়ুন:- তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম