যাকাতের হিসাব
Share this
যাকাত ধনবান হওয়া সত্বেও যে যাকাত দেয় না সে আল্লাহ পাকের নিকট ভীষণ পাপী হবে এবং কিয়ামতের দিন তার ভীষণ আযাব ভােগ করতে হবে।
হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে ; “যে সােনা, রূপা জমা থাকা সত্ত্বেও তার যাকাত দেয়নি, কিয়ামতের দিন তাকে শাস্তি দেয়ার জন্য ওই জমাকৃত সােনা, রূপার পাত বানিয়ে ঐ পাতগুলাে দোযখের আগুনে উত্তপ্ত করে তার বুকে, পিঠে, পাঁজরে এবং কপালে দাগ দেয়া হবে। পাতগুলাে একবার ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পুনর্বার উত্তপ্ত করে নেয়া হবে।”
যে ব্যক্তি ৫২০ তােলা রূপা অথবা ৭০ তােলা সােনার কিংবা তার সম মূল্যের অর্থের অধিকারী হয় এবং তার কাছে ঐ পরিমাণ সম্পদ পুরা এক বছরকাল থাকে, তার ওপর যাকাত ফরয।
এরচেয়ে কম হলে যাকাত ফরয নয়। এর চেয়ে বেশি হলেও যাকাত ফরয হবে। এ মালকে “নেছাব” বলে এবং যে এ পরিমাণ মালের মালিক হয় তাকে “মালিকে নেছাব” বা “ছাহেবে নেছাব” বলা হয়।
যাকাত আদায় পদ্ধতি আল্লাহ্ তা’আলা যেদিন তােমাকে মালিকে নেছাব করলেন, সেদিন আল্লাহর শােকর করবে এবং সেই তারিখটি মনে রাখবে।
এরপর যখন বছর শেষ হবে তখন বিলম্ব না করে হিসেবে করে যাকাত দিয়ে দেবে। নেক কাজে দেরী করা ঠিক নয়। কেননা, কে জানে, হঠাৎ মৃত্যু হলে নেক কাজ করার সুযােগ থেকে বঞ্চিত হবে এবং পাপের বােঝা স্কন্ধে থেকেই যায়।
আরো পড়ুন:- ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম
এক বছর অতীত হওয়ার পর যাকাত না দেয়া অবস্থায় দ্বিতীয় বছরও গত হয়ে গেলে গুনাহগার হবে। তখন তওবা করে কাকুতি মিনতি করে মাফ চেয়ে উভ বছরের যাকাত হিসেব করে দিয়ে দেবে। মােট কথা, জীবনের যে কো সময় দিয়ে দিবে, বাকী রাখবে না।
যাকাত গ্রহণ যাদের জন্য জায়েয সম্পদশালী লােকের জন্য যাকাত খাওয়া বা তাকে যাকাত দেয়া দুরস্ত নেই। সম্পদশালী দু প্রকার ও একঃ যার ওপর যাকাত ওয়াজিব হয়। যেমন-যার কাছে ৭০ তােলা স্বর্ণ অথবা ৫২০ তােলা রৌপ্য আছে বা ওই মূল্যের দোকানদারীর মাল-আসবাবপত্র আছে, তার ওপর যাকাত, ফিত্রা এবং কোরবানী করা ওয়াজিব হবে।
কাদের যাকাত দেওয়া যাবে কাদের যাবে না?
সে যাকাত খেতে পারবে না। তাকে প্রদান করলে যাকাত আদায় হবে না। দ্বিতীয়ঃ যার ওপর যাকাত ওয়াজিব নয় ; যেমন যার কাছে উল্লিখিত তিন ধরনের মাল নেই বটে কিন্তু দৈনন্দিন জীবন-যাপনের আবশ্যকীয় মাল আসবাবপত্র ঘরবাড়ি ছাড়া উল্লিখিত মূল্যের অতিরিক্ত অন্য সম্পদ আছে, তার ওপর যাকাত ওয়াজিব নয়।
যার কাছে নেছাব পরিমাণ সম্পদ নেই বটে, কিন্তু অল্প কিছু সম্পদ আছে। কিংবা কিছুই নেই, এমন কি এক দিনের আহারের ব্যবস্থাও নেই, এ ধরনের লােককে গরীব বলে। এদের যাকাত দেয়া জায়েয আছে, এদের যাকাত গ্রহণ করা জায়েয আছে।
অর্থাৎ গরীব তাকে বলে, যার কাছে কিছু মাল-সম্পত্তি আছে কিন্তু নেছাব পর্যন্ত পৌঁছেনি কিংবা যার কাছে কিছুই নেই, এমনকি, একদিনের আহারের ব্যবস্থাও নেই এদেরকে যাকাত দেয়াও জায়েয এবং তাদের যাকাত গ্রহণও জায়েয।