যৌতুক প্রথা কী? যৌতুক নেওয়া হারাম নাকি হালাল
Share this
যৌতুক প্রথা ও ইসলাম
বিয়ের সময় মেয়ের পিতা বা অভিভাবক খুশী হয়ে তার সাধ্যানুযায়ী যৌতুক দেবে এটা অতি উত্তম সওয়াবের কাজ। কিন্তু এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা হারাম। অনেকে মানুষকে দেখানোর জন্যে বিয়ের সময় মেয়েকে প্রচুর যৌতুক উপহার দেয়। এই যে প্রদর্শনেচ্ছা এটা স্পষ্ট হারাম ।
অবশ্য এ কথাও যুক্তিসঙ্গত যে, একটা মেয়ে এবং ছেলে যখন নতুন সংসার গড়তে যাচ্ছে তখন তার সংসারে বহু জিনিসের প্রয়োজন হয়। সুতরাং মেয়ের ও ছেলের পিতা বা অভিভাবক তাদেরকে খুশী হয়ে যৌতুক দেবে। এতে করে নব দম্পতির সংসার করা সহজ হবে। কিন্তু এটাও হতে হবে অভিভাবকের আয়ত্বের মধ্যে ।
কিন্তু বর্তমান সমাজে বিয়ের সময় ছেলেপক্ষ যেভাবে মেয়েপক্ষের নিকট দাবী করে যৌতুক আদায় করে। তা সম্পূর্ণ হারাম। দাবী করে যৌতুক আদায় করা প্রথা একটি অমানবিক নিকৃষ্ট প্রথা । এ জঘন্য প্রথার কারণে কত মেয়ের যে বিয়ে হচ্ছে না, কত মেয়ে যে আত্মহত্যা করছে, কত মেয়ে স্বামীর অত্যাচার ভোগ করছে তার হিসেব নেই।
আবার এটাও ঠিক নয় যে কৃপণতার কারণে মেয়ের অভিভাবক বিয়ের সময় তাকে কিছুই দেবে না। নবী পত্নী হযরত হাফসা (রা) হযরত ওমর (রা) এর মেয়ে ছিলেন। ওমর (রা) তাকে বলেছিলেন, “তুমি রাসূল (দ) এর কাছে কিছু চাইবে না। যা প্রয়োজন, আমার কাছে চাইবে।” সুতরাং বিয়ের সময় বা পরে মেয়ের পিতা বা অভিভাবক তার সাধ্যানুযায়ী দেবে এটাই স্বাভাবিক। দান যৌতুকের রেওয়াজ যে ইসলামে রয়েছে এবং শরীয়াতে তা অসমর্থিতও নয়, তাতে কোন সন্দেহ নেই । হাদীস থেকে স্পষ্ট জানা যায়, বা করীম (স) নিজে তাঁর কন্যাদের বিয়ের সময় যৌতুক দান করেছেন।
যৌতুক দেয়ার রেওয়াজ রাসূলে করীম (স) এর যুগেও বর্তমান ছিল এবং নবী হযরত আলী (রা) বলেছেনঃ “ রাসূলে করীম (স) ফাতিমাকে যৌতুক হিসেবে দিয়েছিলেন একটি পাড়ওয়ালা কাপড়, একটি পানির পাত্র, আর একটি চামড়ার তৈরি বালিশ।
যার মধ্যে তীব্র সুগন্ধিযুক্ত ইযখির খড় ভর্তি ছিল। হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত অপর এক হাদীস থেকে জানা যায়, নবী করীম (স) এই কয়টি জিনিস ছাড়াও দুইটি যাঁতা এবং পাকা মাটির একটি পাত্র ফাতিমা (রা) কে যৌতুক হিসেবে দিয়েছিলেন।
এসব হাদীসের ভিত্তিতে আল্লামা আহমাদুল বান্না লিখেছেনঃ “এ পর্যায়ের যাবতীয় হাদীস প্রমাণ করে যে, যৌতুক দানের ব্যাপারে মধ্যম নীতি অবলম্বন করা এবং তাতে বিপুল প্রাচুর্যের বাহুল্য না মনে করা আবশ্যক ।
আরো পড়ুন:- বিয়ের পরের জীবন ও কোরআনের বিধান