নারীর পর্দা সম্পর্কে ইসলাম
Share this
পারিবারিক জীবন
পর্দা : পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলা মহিলাদের জন্য পর্দা করাকে ফরজ করেছেন। আল্লাহ কোরআন মাজীদে বলেছেন, “হে মুসলমান নারীগণ! তোমরা তোমাদের ঘরে অবস্থান কর। (অপ্রয়োজনে এবং বেপর্দায় ঘর হতে) বের হয়ো না, যেমন মুর্খ যুগের মেয়েরা বের হত।”
আল্লাহ তাআলা পুরুষদেরকেও বলেছেন, “হে পুরুষগণ! তোমরা বেগানা স্ত্রীলোকদের নিকট যেও না, যদি তোমাদের চাবে। পূর্ব যমানার অন্যান্য নবীগণের যুগে যেমন, হযরত আদম (আঃ) হযরত ইব্রাহিম (আঃ) হযরত ইউসুফ (আঃ) প্রমুখ পয়গম্বরগণের আমলে শুধু যেনা (ব্যভিচার) হারাম ছিল । পরপুরুষের সঙ্গে দেখা দেয়া, বাহিরে চলাফেরা হারাম ছিল না।
কিন্তু মানুষ তাদের দুর্বলতার কারণে কাম-রিপুকে বশ করিয়া রাখতে অকৃতকার্য হল । তখন আল্লাহ পাকের রহমতে ইসলামী শরীয়তে পর্দার হুকুম দেয়া হয় । পবিত্র কোরআনে আছে-
زينتهُنَّ إِلا لبـ لا يبدين زينتهن )
উচ্চারণ ঃ লাইউবদীনা যীনাতাহুন্না ইল্লা লিবুউলাতিহিন্না ।
অর্থ : নারীগণ যেন তাদের সৌন্দর্য (আব্রু) তাদের স্বামীদের ব্যতীত পরপুরুষকে না দেখায়।
অন্য এক আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন-
وَلا يَـ
يَضْرِبْنَ بِارْجُلِهِنَّ لِيَعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ .
উচ্চারণ : ওয়ালা ইয়াদরিবনা বি আরজুলিহিন্না লিইউলামা মা ইউখফীনা মিন যীনাতিহিন্না ।
অর্থ : নারীগণ অসংযমী হয়ে যেন তাদের পা এরূপ জোরে নিক্ষেপ করে না যা দ্বারা অন্য লোক তাদের গোপন সৌন্দর্য সম্বে জানাতে পারে বা অন্যেরা তাদের দিকে আকৃষ্ট হয় ।
আল্লাহ পাক আর ও বলেছেন-
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجُ الْجَاهِلِيَّةِ الأولى .
জাহেলিয়াতিল উলা । উচ্চারণ : ওয়া কারনা ফী বুয়ুতিকুন্না ওয়ালা তাবাররাজনা তাবাররুজাল
নিজদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াইও না । অর্থ : তোমরা (স্ত্রীলোকগণ) গৃহে অবস্থান কর। জাহেলিয়াতের যুগের মত নবীগণের কাজকর্ম করার বিধান দাতা সাতত
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)- কে বলেছেন, হে আমার হাবীব! আপনি আপনার বিবিগণকে, আপনার মেয়ে এমনকি অন্যান্য মুসলিম নারীগণকে বলে দিন,
তাদের বাইরে যাওয়ার বিশেষ প্রয়োজন হলে প্রয়োজনীয় কাজ কর্ম করতে যেতে হলে তারা যেন তাদের আপাদমস্তক ঢেকে আব্রু করে বাইরে যায়। এমনকি যাওয়ার সময় তারা যেন বড় চাদর দিয়ে তাদের সৌন্দর্যকে ঢেকে রাখে। মেয়েরা যেন রাস্তায় চলার সময় তাদের চোখ (নজর) নিচের দিকে রাখে।
পরপুরুষের দিকে যেন না তাকায় এবং নিজেদের সতীত্ব ইজ্জত বাঁচায়ে রাখে, এমনকি নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না পায় যেমন শরীরের সৌন্দর্য, জেওর-পোশাকের সৌন্দর্য যেন খোলা না থাকে।
আর স্ত্রীলোক পথ চলতে যেন জোরে পা না ফেলে, তা হলে তাদের লুক্কায়িত সৌন্দর্য প্রকাশ হয়ে পড়বে । সাবধান! আল্লাহ পাক কোরআন পাকে পর্দা সম্বন্ধে এরূপ সূক্ষ্ম বিষয়েও কঠোর তাকিদ দিয়েছেন । কাজেই আমাদের এই হুকুম যথাযথ পালন করতে হবে।
যদি আমরা আল্লাহর হকুমের বিরোধিতা করি, তবে কি আমরা আল্লাহর নাফরমান বান্দা হব না? আমরা আল্লাহরই বান্দা। আল্লাহর হুকুম আমাদের মানতে হবে। বেপর্দাকে সমাজ হতে উচ্ছেদ করতে হবে। আসুন আমরা শপথ নেই যে, আমরা নিজেরাও পর্দা পুরাপুরি পালন করব এবং অপরকে পালন করাতে যত্নবান হব ।
তাহলেই সমাজ জীবন সুশৃংখল ও সুখের হবে। মা-ভগ্নীগণের নিকট অনুরোধ, তারা যেন মাতৃজাতির সম্মান মর্যাদা ঠিক রাখেন এবং তারা যেন সমাজের রাক্ষুসিনী নারী না হন। পুরুষ ও নারীর যথাযথ পৃথক অবস্থানের মাধ্যমেই সমাজে শান্তি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। এতে নারী জাতির সম্মান বাড়বে। বিজাতির অনুকরণে আত্মার দুর্বলতাই প্রকাশ পায় ৷
আরো পড়ুন:- জান্নাতের নাম | জাহান্নামের নাম