ইসলাম

নামাজের পোশাক কেমন হওয়া উচিত

Share this

এক কাপড় দ্বারা কিভাবে নামাজ পড়বে

আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন এক কাপড়ে এভাবে নামায না পড়ে যার কিছু অংশ তার কাঁধের উপর থাকে না ।

আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি এক কাপড় পরে নামায পড়ে সে যেন সেই কাপড়ের দুই প্রান্তভাগ দুই বগলের নীচ (বুখারী শরীফ) দিয়ে এনে অন্যদিকের কাধের উপর রাখে।

বিবস্ত্র হওয়া সর্বাবস্থায় অপছন্দনীয় ঃ

জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, রাসূল (সাঃ) কুরাইশদের সাথে কা’বা গৃহ (মেরামতের জন্য) পাথর বহন করছিলেন। তাঁর পরিধানে ছিল লুঙ্গি।

তাঁর চাচা আব্বাস তাঁকে বললেন, ভাতিজা! তোমার লুঙ্গিটা খুলে কাঁধে পাথরের নীচে রাখলে ভাল হত। বর্ণনাকারী বললেন, তিনি তা খুলে কাঁধে রাখা মাত্র মূহুর্তে মুচ্ছিত হয়ে পড়েন। এর পর (বুখারী শরীফ) আর কখনও তাঁকে বিবস্ত্র হতে দেখা যায় নাই ।

একটি মাত্র কাপড় দ্বারা নামায আদায় :

মুহাম্মদ ইবনে মুনকাদের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, আমি জাবের ইবনে আবদুল্লাহ-এর নিকট গিয়ে দেখলাম, তিনি একটি কাপড় বগলের নিম্নদেশ দিয়ে কাঁধের উপর রেখে নামায পড়ছেন এবং তার চাদর অন্যত্র রাখা হয়েছে।

তিনি নামায শেষ করলে আমরা বললাম, হে জাবের ইবনে আবদুল্লাহ! আপনি চাদর রেখে নামায পড়েন? তিনি বললেন, হ্যাঁ তোমাদের মত অজ্ঞদেরকে দেখাবার জন্য আমি এইরূপ করলাম। আমি রাসূল (সাঃ) কে (বুখারী শরীফ) এইভাবে নামায পড়তে দেখেছি।

নকশা করা কাপড়ে নামাজ আদায়

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ) একদা একটি নকশাঙ্কিত চাদরে নামায পড়লেন। তাঁর দৃষ্টি একবার নকশার দিকে পড়ল । তিনি নামায শেষ করে বললেন, এ চাদরটি আবু জাহমের নিকট নিয়ে যাও এবং তার নিকট থেকে নকশাবিহীন চাদরটি নিয়ে আস।

কেননা চাদরটি এমাত্র আমাকে নামায থেকে অমনোযোগী করেছিল। হেশাম তার পিতার মাধ্যমে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, আমি নামাযের মধ্যে চাদরটির নকশার প্রতি তাকাতে ছিলাম এবং আমার ভয় হচ্ছিল যে, এটি আমাকে ফেতনায় (বুখারী শরীফ) ফেলে না দেয়।

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আয়েশার একটি চাদর ছিল; তা দিয়ে তিনি ঘরের একদিকে পর্দা করেছেন। রাসূল (সাঃ) একদা বললেন, তোমার এ চাদরটি সরিয়ে ফেল ।

কেননা নামাযের সময় এর নকশাগুলো সর্বদা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে রেশমী পোষাক তাকওয়ার পরিপন্থি :

ওকবাহ ইবনে আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) কে একটি রেশমী ফররুজ (পিছনে কর্তিত লম্বা কোট বিশেষ) হাদিয়া দেয়া হল ।

তিনি তা পরে নামায পড়লেন । নামায শেষ করে তিনি তা দ্রুত খুলে ফেললেন। মনে হল, তিনি এ পোষাকটি অপছন্দ করেছেন। তারপর তিনি বললেন, পরহেজগারের জন্য এটা শোভনীয় নয় । (বুখারী শরীফ)

নামাযীর সামনে লাঠি পুতে রাখা :

আবু জুহাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) কে একটি লাল চামড়ার তাঁবুর মধ্যে দেখলাম । বিলালকে দেখলাম তাঁর অজুর পানি নিয়ে সেখানে উপস্থিত থাকতে।

লোকদেরকে দেখলাম তাঁর ব্যবহৃত অজুর পানি নেয়ার জন্য কাড়া কাড়ি করতে । যারা পানি পেল, তা দিয়ে তাদের নিজেদের শরীর মাসেহ করল এবং যারা তা পেল না, তারা অন্যের হাতের আদ্রতা নিতে থাকল।

তারপর দেখলাম, বিলাল একটি বর্ণা এনে মাটিতে পুতে দিলো। এর পর রাসূল (সাঃ) একটি লাল পোশাক পরে এবং তা খানিকটা উঁচু করে বের হলেন। তিনি বর্শাটির দিকে মুখ করে লোকদেরকে দুই রাকাত নামায পড়ালেন । সে সময় মানুষ ও জন্তুদেরকে বর্শাটির সম্মুখ দিয়ে আমি চলতে দেখলাম । (বুখারী শরীফ)

নামাযরত অবস্থায় স্ত্রীর স্পর্শ দোষনীয় নয় :

মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) নামায পড়তেন এবং আমি ঋতু অবস্থায় তাঁর বরাবর বসে থাকতাম ।

কখনও কখনও সিজদার সময় তার কাপড় আমার দেহে স্পর্শিত হত । অথচ তিনি জায়নামাযে নামায রত অবস্থায় থাকতেন । (বুখারী শরীফ)

পবিত্র যে কোন চাটাই কিংবা কাপড়ে নামাজ হয় :

আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁর দাদী মুলাইকা একবার রাসূল (সাঃ) খাওয়ার দাওয়াত করলেন। খাবার শুধুমাত্র তাঁর জন্য তৈরী করা হয়েছিল ।

তিনি খাওয়ার পর বললেন, দাঁড়াও আমি তোমাদের এখানে নামায পড়ব। আনাস বললেন, আমি একটি চাটাই আনতে গেলাম । চাটাইটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে কালো হয়ে গিয়েছিল ।

আমি তা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললাম । তারপর রাসূল (সাঃ) তার উপর দাঁড়িয়ে গেলেন । আমি ও (জনৈক) ইয়াতিম নামায পড়ালেন । তারপর তিনি চলে গেলেন । তাঁর পিছনে দাঁড়ালাম এবং বৃদ্ধা আমাদের পিছনে দাঁড়াল। রাসূল (সাঃ) আমাদেরকে দুরাকাত নামাজ পড়ালেন।

আরো পড়ুন:- নামাজে যে সব কাজ মাকরূহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *