নামাজ

জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত

Share this

জামাআতের নামাজ পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। অনেক আলেম, ওয়াজিব বলেন । এমতই গ্রহণীয় । ফরয নামাজ জামাআতে পড়তে হবে। দুই ঈদের ওয়াজিব নামায ও জুমার নামায জামাতে পড়ার হুকুম দুই ঈদের ওয়াজিব নামায জুমার নামায জামাআত ব্যতীত আদায় হয় না। এত্বব্যতীত রমযান মাসে তারাবীহ জামাআতে পড়তে হয়।

রমযানে ওয়াজিব বেতেরও জামাতে পড়া হয়। জামাআতে নামায পড়া একা নামায পড়ার চেয়ে ২৭ গুণ বেশি সওয়াব হয় সর্বদা জামাআতে নামাজ পড়লে পাঁচটি বরকত লাভ হয় :

১। রুজি বৃদ্ধি হবে ।

২। কবর আযাব হতে মুক্তি পাবে ।

৩। কেয়ামতের দিন আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে ।

৪। পুলসেরাত বিজলীর ন্যায় পার হয়ে যাবে ।

৫। বিনা হিসাবে বেহেশতে যাবে।

বিনা ওজরে জামাআত তরক করলে মারাত্মক গুনাহগার হতে হবে যে বিনা কারণে জামাআত তরক করবে সে নয়টি কষ্টে পতিত হবে।

এর মধ্যে তিনটি আযাব হবে দুনিয়ায় :

১। রুজিতে বরকত হবে না ।

২। চেহারায় নূর থাকবে না ।

৩। লোকের মহব্বত কমে যাবে।

তিনটি আযাব হবে কবরে

১। কবরে সওয়াল বেশি হবে ।

২। কবর অন্ধকার হবে।

৩। কবর তাকে ভয়ানকভাবে পিষবে তিনটি আযাব হবে কেয়ামতে ঃ ১। কেয়ামতের হিসাব কঠিন হবে ।

২। শরীরে বেশি ঘাম হবে ।

৩। পুলসেরাত পার হতে কষ্ট হবে ।

জামাতে নামাজ পড়ার নিয়ম

মুয়াযিন নির্দিষ্ট থাকলে তিনিই একামত বলবেন। অন্যথায় যে, কেউ একামত বলবেন। এক্কামত শেষ হওয়ার সাথে সাথে ইমাম নিয়ত করে নামাযের তাকবীর বলে তাহরীমা বাঁধবে । মোক্তাদীগণও সাথে সাথে নিয়ত করে তাহরীমা বাঁধবে

ইমাম ছানা, তাআউয ও তাসমিয়া পাঠ করে ক্বেরাআত শুরু করবেন। মোক্তাদীগণ ছানা পড়ে চুপ করে ইমামের ক্বিরআত শুনবে। অথবা চুপে চুপে দাঁড়িয়ে থাকবে। ইমামের সূরা ফাতিহা পড়া হলে এবং মোক্তাদীগণ তা শুনতে পেলে চুপে চুপে আমীন বলবে।

ইমাম ক্বেরআত শুরু করার পর কেউ নামাযে শামিল হলে চুপ করে ক্বেরআত শুনবে, সানা পড়বে না। ইমাম ‘সামিআল্লাহুলিমান হামিদাহ’ বলে রুকু থেকে দাঁড়াবেন আর মোক্তাদীগণ ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’বলে সোজা হয়ে দাঁড়াবে ।

মোক্তাদিগণ সব কাজে ইমামের অনুসরণ করবে। মোক্তাদীগণ তাকবীর, তাসবীহ ইত্যাদি চুপে চুপে পাঠ করবে। ইমাম মুনাজাতের জন্য হাত উঠালে মোক্তাদীগণ ‘আল্লাহুম্মা আমীন’ বলে হাত তুলবে এবং দোয়া শুনা গেলে সুবিধা মত দোয়া করবে।

মাগরিব এবং এশা প্রথম দুই রাকআত ও ফজরের উভয় রাকআতে ইমাম উচ্চ শব্দে ক্বেরআত পড়বেন। যোহর ও আছরের প্রত্যেক রাকআতেই ইমাম বা একাকী নামাযী সবাই কেরআত চুপে চুপে পড়বে।

সাথে না মিলে তাদের নামায বাতিল হয়ে যাবে । মোক্তাদীগণ ইমামের পূর্বে রুকু সেজদা করলে যদি ইমামের রুকু, সেজদা তার

মাসবুকের নামাজ

জামাআতে দুই এক রাকআত হয়ে যাওয়ার পরও নামাজে শরীক হওয়া যায়। এইরূপ যে ব্যক্তি পরে শরীক হয় তাকে মাসবুক বলে ।

মাসবুক নামাযে শরীক হয়ে চুপ করে ইমামের তাবেদারী করতে থাকবে। নিজে তাআউয ও তাসমিয়া কিছুই পড়বে না। তবে উচ্চস্বরে ক্বিরআত না হলে নিয়্যত করে ছানা পড়ে নিবে।

অতঃপর ইমাম সালাম ফিরালে মাসবুক তার সাথে সালাম ফিরাবে না। ইমাম সাহেবের দ্বিতীয় সালামের পর পরই সে দাঁড়িয়ে যাবে এবং ইমামের সাথে যা পড়েছে তা ছাড়া নিজের যা ছাড়া পড়েছে তা আদায় করবে।

মাসবুকের যদি মাত্র এক রাকআত বাদ গিয়ে থাকে তবে ইমামের সাথে শেষ বৈঠকে বসে শুধু তাশাহহুদ পড়ে চুপ করে থাকবে। ইমাম দ্বিতীয় সালাম ফিরালে চুপে আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে যাবে এবং তাআউয ও তাসমিয়া পড়ে সূরা ফাতিহা এবং সংগে অন্য কোন সূরা মিলিয়ে এক রাকআত আদায় করবে ।

মাগরিবের নামাযে যদি দুই রাকআত আদায় করবে। নিয়ম এই যে, ইমামের সাথে বৈঠকে শুধু আত্তাহিয়্যাতু পড়বে। সালামের পর, তাআউয, তাসমিয়া এবং সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে একরাকআত পড়ে বসে যাবে এবং তাশাহুদ পড়ে তাকবীর বলে দাঁড়িয়ে পুনঃ ফাতিহার সাথে সূরা মিলিয়ে দ্বিতীয় রাকআত পড়বে।

 অতঃপর আত্তাহিয়্যাতু, দরূদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে নামায শেষ করবে ।চার রাকআত বিশিষ্ট নামাযের শেষ দুই রাকআতে বা এক রাকআতে শরীক হলে পরবর্তী দুই রাকআতে ফাতিহার সাথে সূরা মিলিয়ে পড়বে। শেষ বৈঠকে শরীক হলে ইমাম সালাম ফিরালে, উঠে সব একাকী হিসাবে পূর্নভাবে নামায আদায় করবে।

আরো পড়ুন: নাপাক অবস্থায় নামাজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *