ইসলাম

কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত

Share this

হাদীসের আলোকে তেলাওয়াতে কোরআন

মহানবী (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আল্লাহ্ তা’য়ালার সাথে কথাবার্তা বলতে চায়, তবে সে যেন কুরআন শরীফ পড়ে। মানবের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ধনী ঐসকল ব্যক্তি যারা আল্লাহ্র কুরআন বহনকারী। (অর্থাৎ যাদের সিনার মধ্যে আল্লাহ্ তা’য়ালা কুরআন শরীফ রেখেছেন)।

উদ্দেশ্যগত অর্থ হল- যারা কুরআন শরীফ পাঠ করে এবং তদনুযায়ী আমল করে, তাদের চেয়ে ধনী আর কেউ নেই । এটা আমল করার বরকতে আল্লাহ্ পাক অনুগ্রহ করে বাতেনী সম্পদ প্রদান করেন। আর যাহেরি আর্থিক স্বচ্ছলতাও লাভ হয় ।– আহমদ, হাকেম

নিম্নরূপ- এ বিষয়ে হযরত হাসান বসরী (র) হতে একটি বাস্তব ঘটনা বর্ণিত আছে । ঘটনাটি হযরত ওমর ফারুক (রা)-এর খেলাফতকালে এক ব্যক্তি পার্থিব স্বার্থের উদ্দেশ্যে খলিফার দ্বারদেশে যাতায়াত করত । হযরত ওমর (রা) তাকে বললেন, যাও বেশি করে আল্লাহ্র কিতাব তিলাওয়াত কর ।

একথা শুনে ঐ ব্যক্তি চলে গেল । এরপর হযরত ওমর (রা) দীর্ঘদিন যাবৎ তাকে দেখতে পাননি। এক দিন তিনি স্বয়ং তার সন্ধান করে তাকে বললেন, আমি তোমার সন্ধান করতেছিলাম। কিছু না বলে কোথায় চলে গিয়েছিলে?

উত্তরে লোকটি আরজ করল, আমি আল্লাহ্র কিতাবে এমন জিনিস পেয়েছি যা আমাকে ওমরের দরওয়াজার মুখাপেক্ষী হতে বে-নিয়ায করে দিয়েছে।

অর্থাৎ, পবিত্র কুরআন মজিদে আমি এমন আয়াত প্রাপ্ত হয়েছি যার বরকতে পার্থিব জীবন হতে আমার দৃষ্টি উঠে গিয়েছে এবং সমস্ত বিষয়ের অভাব মোচনকারী আল্লাহর উপর আমার একান্ত ভরসা জন্মেছে ।

আপনার কাছে দুনিয়ার উদ্দেশ্যেই আসতাম। এখন এসে কি করব? এই ব্যক্তি যে আয়াতের বরকতে হযরত ওমরের দ্বারদেশ ত্যাগ করেছিল, সম্ভবত এটা নিম্ন আয়াতের বিষয়বস্তুর ইঙ্গিত বহন করে । যেমন বলা হয়েছে-

وَفِي السَّمَاءِ رِزْقَكُم وما توعدون .

অর্থাৎ তোমাদের রিযিক আসমানেই রয়েছে (সেখান থেকে আল্লাহ্ তা’য়ালা কর্তৃক তোমাদের রিযিক পাঠানো হয়) এবং যে বিষয় সম্বন্ধে তোমাদের সাথে ওয়াদা করা হয়েছে (ইহাও আসমানে আছে) অর্থাৎ, আল্লাহ্ বলেন,

তোমাদের রিযিক সহ যাবতীয় কার্যের ব্যবস্থা আমারই দরবার হতে সম্পন্ন হয়ে থাকে। সুতরাং আমা ব্যতিরেকে অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়ার কি সার্থকতা থাকতে পারে?- সূরা যারিয়াত ।

আরো পড়ুন:- আল্লাহ তায়ালার পরিচয়

রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, সর্বোত্তম ইবাদত কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করা। (অর্থাৎ, ফরজ ইবাদতসমূহের পর সর্বোত্তম নফল ইবাদত হচ্ছে কুরআন মজিদ পাঠ করা) ।

কানযুল উম্মাল রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, যারা কুরআন মজিদ মুখস্থ করেছে তাদেরকে তাযিম কর। কুরআন মুখস্থকারীকে যারা তাযিম করবে, তারা যেন আমাকেই তাযিম করল।

রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরআন শিক্ষা দিয়েছে এবং এতে যা আছে তদুনযায়ী আমল করেছে, আল্লাহ্ তা’য়ালা কিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির পিতামাতাকে এমন একটি নূরের টুপি পরিয়ে দিবেন, যার আলো দুনিয়ায় তোমাদের ঘরে সূর্যের আলো পতিত হলে ঘর যেরূপ আলোকিত হয়ে যায়, এটা অপেক্ষা অনেক বেশি উজ্জ্বল হবে ।

যে ব্যক্তি কুরআন পড়ল (এবং শিক্ষা করল) আর মনে করল যে, সে যে নিয়ামত প্রাপ্ত হয়েছে খোদার সৃষ্ট জীবের মধ্যে কুরআন শিক্ষায় বঞ্চিত অন্য কোনো শিক্ষায় শিক্ষিত অপর কাউকে এটা অপেক্ষা বৃহত্তর নিয়ামত প্রদান করা হয়েছে,

তাহলে সে নিশ্চয় ঐ জিনিসকে ছোট করল, যাকে আল্লাহ্ তা’য়ালা বড় করেছেন এবং ঐ জিনিসকে বড় করল যাকে আল্লাহ্ তা’য়ালা ছোট করেছেন।

কুরআন শিক্ষিতদের সঙ্গত নয় যে, যদি তাঁর সঙ্গে কেউ কঠোর ব্যবহার করে তিনিও তার সথে কঠোর ব্যবহার করবেন, আর যে তাঁর সাথে মূর্খের ন্যায় ব্যবহার করবে, তিনিও তার সাথে তদ্রূপ ব্যবহার করবেন, বরং কুরআনের মাহাত্মের দরুন তাকে ক্ষমা করে দেয়া উচিত।

কুরআন শিক্ষিতদের উচিত তারা যেন জনগণের সাথে দুর্ব্যবহার না করেন; কুরআনের আমত এবং ইজ্জাত এটাই চায় । জনগণের মধ্যে যদি কেউ তোমাদের সাথে মূর্খোচিত ব্যবহার করে, তবে মাফ করে দেয়া উচিত ।

হাদীস শরীফে এসেছে-

الْقُرْآنُ احَبَّ إِلى اللهِ مِنَ السَّمَوتِ وَالْاَرْضِ وَمَنْ فِيْهِنَّ – رواه) ابو نعيم عن ابن عمر )

আসমান, যমীন এবং তন্মধ্যে যারা আছে, তৎসমুদয়ের চেয়ে কুরআন মজিদ আল্লাহ তায়ালার নিকট অধিক প্রিয় । অর্থাৎ কুরআন মজিদের মর্যাদা সমস্ত সৃষ্টির উপরে। আর কুরআন মজিদ আল্লাহ্ তা’য়ালার নিকট সমধিক প্রিয় ।

হাদীস শরীফে আরও এসেছে-

مَنْ عَلَّمَ عَبْدًا أيَةً مِّنْ كِتَابِ اللهِ فَهُوَ مَوْلَاهُ لَا يَنْبَغِى لَهُ اَنْ تَخذَلَهُ وَلَا يَسْتَاثِرَ عَلَيْهِ فَإِن هُوَ فَعَلَهُ قَصَمَ عُرْوَةً مِّنْ عَرِي

الاسلام – رواه ابن عدى (والطبراني

অর্থাৎ “ যে ব্যক্তি আল্লাহর- কোনো বান্দাকে খোদার কিতাব (কুরআন শরীফ) হতে একটি আয়াত শিক্ষা দিল এই শিক্ষাদাতা তার (ঐ শিক্ষার্থীর) মনিব হয়ে গেল। অতএব,

এই শিক্ষার্থীর পক্ষে প্রয়োজনের সময় ঐ ওস্তাদের সাহায্য হতে বিরত থাকা সঙ্গত হবে না এবং ঐ ওস্তাদের উপর অন্য কাউকে অধিক মর্যাদা দান করাও সঙ্গত হবে না, যে প্রকৃতপক্ষে ঐ ওস্তাদের তুলনায় অধিক মর্যাদাশালী নয় ।

যদি ঐ তালেবে ইলম এমন করে, তবে সেই ইসলামের হল্কা (কড়া) সমূহের একটি হল্কা ছিন্ন করে ফেলল । অর্থাৎ এমন অসঙ্গত কাজ করল যাতে সে ইসলামের মধ্যে ভীষণ ফেত্না সৃষ্টিকারী এবং শরীয়তের মহা বিধান লঙ্ঘনকারী বলে সাব্যস্ত হবে: যার ফলে ইহকাল ও পরকালে অকল্যাণ ও কঠিন শাস্তির আশঙ্কা বিদ্যমান ।

হাদীস শরীফে আছে-

كَبِيرَنَا وَلَمْ يَرْحَمَ صَغِيرَنَا وَلَمْ ثمَّ يَجَلْ لَيْسَ مِنْ أُمَّتِي مَنْ

يُعْرِفُ لِعَالِمِنَا حَقَّه – اسناده حسن

অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,“ আমার উম্মতের যে ব্যক্তি আমাদের বড়দিগকে সম্মান করে না, আমাদের ছোটদের প্রতি স্নেহ (সুলভ ব্যবহার) করে না এবং আমাদের আলেমদের হক ও মর্যাদা বুঝে না (তাদেরকে শ্রদ্ধা করে না)সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয় ।

এখানে যে কুরআন শরীফ পড়ে এবং যে শিক্ষা দেয় উভয়ে আলেম শব্দের অন্তর্ভুক্ত। যে ব্যক্তি এই হাদীস অনুযায়ী কার্য না করবে, যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর উম্মতের আলেমের হক ও মর্যাদা বুঝা এবং আলেমদের শ্রদ্ধা করা একান্ত কর্তব্য।”

বাহিরে থাকবে, তার ঈমান দুর্বল । সুতরাং বড়কে সম্মান করা, ছোটকে স্নেহ করা এবং যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ শিক্ষা করেছে, এর অর্থ ও তফসির বুঝেছে, অথচ তদনুযায়ী আমল করল না, সে দোযখকে আপন বাসস্থান নির্ধারিত করে নিল ।

হাদীস শরীফে আছে –

قِيْلَ يَارَسُولَ اللهِ إِنَّ فَلَانًا يَقْرَأُ بِاللَّيْلِ كُلَّهُ فَإِذَا أَصْبَحَ سَرَقَ

قَالَ سَتَنْهَاهُ قِرَائَتُهُ .

অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে আরজ করা হল, অমুক (ব্যক্তি) সারারাত্রি জেগে কুরআন শরীফ পড়ে, কিন্তু যখন রাত্রি শেষে প্রভাত হয়ে আসে তখন চুরি করে। (উত্তরে) তিনি বললেন, অদূর ভবিষ্যতে তার এই কুরআন পাঠ তাকে এই কাজ থেকে ফিরিয়ে আনবে ।

হযরত আলী (রা) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ পড়বে এবং মুখস্থ করবে, এর নির্দেশিত হালালকে হালাল মান্য করবে এবং এর নির্দেশিত হারামকে হারাম মান্য করবে,

আল্লাহ্ তা’য়ালা তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন এবং তার খান্দানের এমন দশ ব্যক্তির জন্য তার সুপারিশ কবুল করবেন, যাদের প্রত্যেকের জন্য দোযখ নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল । – আমদ, তিরমিযী

রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব হতে ওযুর সাথে একটি অক্ষর শুনল, তার আমলনামায় দশটি নেকি লেখা হবে এবং তার দশটি গুনাহ্ দূর করে দেয়া হবে, তার দশটি মর্যাদা বুলন্দ করে দেয়া হবে ।

আর যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের একটি অক্ষর নামাজে বসে পড়বে, তার আমলনামায় পঞ্চাশটি নেকি লেখা হবে। তারপর পঞ্চাশটি গুনাহ্ মিটিয়ে দেয়া হবে । তার পঞ্চাশটি মরতবা বুলন্দ করে দেয়া হবে ।

উল্লিখিত নামাজ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে নফল নামাজ। কেননা, ফরজ নামাজ বিনা ওযরে বসে পড়া জায়েয নেই। ওযর বশত বসে পড়লেও দাড়িয়ে পড়ার পূর্ণ সওয়াব পাবে।

ওযর ব্যতীত নফল নামাজ বসে পড়া জায়েয আছে। যে ব্যক্তি নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহ্র কিতাব হতে একটি হরফ পড়বে, তার আমলনামায় একশত নেকি লেখা হবে । তার একশত গুনাহ্ মিটিয়ে দেয়া হবে। আর একশত মরতবা বুলন্দ করা হবে।

যে ব্যক্তি কুরআন পড়তে পড়তে এটা খতম করল- আল্লাহ্ তা’য়ালা (আপন দরবারে) তার জন্য দুয়া লিখে নিবেন, যা হয়ত তৎক্ষণাৎ কবুল হবে, অথবা ভবিষ্যতে কবুল হবে । হাদীস শরীফে আছে

مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ وَحَمِدَ الرَّبَّ وَصَلَّى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ

وَسَلَّمَ وَاسْتَغْفَرَ رَبَّهَ فَقَدْ طَلَبَ الخَيْرَ مَكَانَهُ – رواه البيهقى

অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ পাঠ করল এবং আল্লাহ তা’য়ালার প্রশংসা করল, সে আলহামদুলিল্লাহ বলুক বা অনুরূপ অর্থবোধক অন্য কোনো শব্দ বলুক, এতে আল্লাহর নিকট তা’রিফ হয়ে যাবে আর যে ব্যক্তি নবী আলাইহিস সালামের উপর দরুদ পাঠ এবং আল্লাহর নিকট নিজের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করল, নিঃসন্দেহে সে কল্যাণকে এর স্থান হতে চেয়ে নিল ।

অর্থাৎ দ্রুত কবুল হওয়ার জন্য দুয়া করার যে নিয়ম আছে তদানুযায়ী সে দুয়া করেছে; বিধায় তার দোয়া কবুল হওয়ার আশা রয়েছে।

রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা নিজেদের স্ত্রীদেরকে সূরা-ওয়াকিয়া শিখাও। নিশ্চই এই সূরা ধন-সম্পদ আনয়নকারী অর্থাৎ সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করলে স্বচ্ছলতা আসে; রূহানী সম্পদও লাভ হয় ।

যেমন, অন্য হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি রাত্রিকালে সূরা -ওয়াকিয়া পড়বে তার কখনও রিজিকের অভাব হবে না। স্বভাবত স্ত্রীলোকের অন্তর বেশি দুর্বল থাকে । সামান্য অভাব অনটনে তারা পেরেশান হয় পড়ে।

তাই স্ত্রীলোকের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছ। অবশ্য অভাব-অনটন দূর হওয়ার জন্য সূরা -ওয়াকিয়া পাঠ করা স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্যই অত্যন্ত উপকারী । – দায়লামী তিলাওয়াতে কোরআনের আদব হাদীস শরীফে আছে –

أَحْسَنُ النَّاسِ قِرَانَةً نِ الَّذِى إِذَا قَرَءَ ايَةٌ أَنَّهُ يَخْشَى اللَّهَ – كنز

العمال)

কুরআন তিলাওয়াতকারীদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যক্তি যে কুরআন শরীফ পাঠকালে মনে করে যে, সে আল্লাহকে ভয় করে। মোটকথা, এমন সতর্কতার সাথে পড়ে, যেন কোনো ভীত ব্যক্তি হাকিমের সম্মুখে কোনো প্রকার ত্রুটি ও বেআদবি প্রকাশ পাবার ভয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কথা বলে থাকে ।

কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করার উত্তম পন্থা এই যে, ওযূ সহকারে কেবলামুখী হয়ে বসবে। ভক্তি ও নম্রতার সাথে কোরআন পাঠ করবে। আর একথা মনে করবে যে, আল্লাহ্ তা’য়ালার সাথে কথা বলতেছি।

অর্থ জানা থাকলে অর্থের দিকে লক্ষ্য করে পড়বে। যেখানে রহমতের আয়াত আসবে, সেখানে রহমতের দুয়া করবে। আর যেখানে আযাবের আয়াত আসবে, সেখানে দোযখ হতে আশ্রয় প্রার্থনা করবে।

পড়া শেষ হলে প্রথমে আল্লাহ্র প্রশংসা তারপর রাসূলের প্রতি দরুদ পাঠ করে গুনাহ্ হতে মাফ চাইবে। আর যে কোনো নেক দুয়া করবে এবং পুনরায় দরুদ শরীফ পড়বে।

কুরআন তেলাওয়াতের সময় মনে বাজে খেয়াল আসতে দিবে না। যদি কোনো কারণবশত খেয়াল এসেই যায়, তবে ঐ দিকে লক্ষ্য করবে না। তাহলে আপনা হতেই ঐ খেয়াল চলে যাবে। তেলাওয়াতের সময় যথাসম্ভব পাক সাফ কাপড় পড়বে ।

দেখে দেখে কুরআন পাঠের উপকারিতা

হযরত আবু ওবায়দা (রা) একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন । যার প্রত্যেক রাবী বলেন, তাঁর দৃষ্টিশক্তি কম ছিল । তিনি তাঁর ওস্তাদের নিকট অভিযোগ করলে ওস্তাদ তাঁকে কুরআন শরীফ দেখিয়ে বেশী বেশী পড়তে বললেন।

তিনি এরূপ করে উপকার পান, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি হয় । সুতরাং কুরআন শরীফ দেখে পড়াতে বিশেষ উপকার আছে।

ফাযায়েলে কুরআন ।

হযরত আউস সাক্বাফী (র) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, কুরআন শরীফ না দুই হাজার দরজা পর্যন্ত বর্ধিত হয়ে যায় । দেখে মুখস্থ পড়লে হাজার দরজার সওয়াব পাওয়া যায়, আর দেখে পড়লে তার সওয়াব তাজবীদ শিক্ষা

(সহীহ করে কোরআন শরীফ পড়ার নিয়মাবলী)

তাজবীদ মানে কুরআন শরীফ সহীহ করে পড়ার বিদ্যা। কুরআন শরীফ সহীহ্ করে পড়ার চেষ্টা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপরই ফরজ। এ সম্বন্ধে অবহেলা বা আলস্য করা শক্ত গুনাহ্ ।

সহীহ্ করে পড়ার অর্থ- আরবি অক্ষরগুলিকে আরববাসীরা যেরূপ উচ্চারণ করে ঠিক তদ্রূপ উচ্চারণ করা এবং ইমামগণ যে সমস্ত কায়দা লিখে গেছেন, সেই সমস্ত কায়দা অনুসারে আরবি উচ্চারণে কুরআন শরীফ পাঠ করা।

উপযুক্ত ওস্তাদের নিকট মশক্ করা ব্যতিরেকে শুধু কিতাব দেখে কুরআন শরীফ সহীহ্ করে পড়া যায় না । কাজেই প্রত্যেকেরই উপযুক্ত ওস্তাদ অন্বেষণ করা দরকার। ওস্তাদের নিকট হতে তাজবীদ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া আবশ্যক।

নিম্নে আমরা ওস্তাদ ও ছাত্রের উপকারার্থে অতি সহজে ও সংক্ষেপে মোটামুটি নিয়মগুলো লিখে দিচ্ছি:

কায়েদা : যে হরফগুলো ভাল মত লক্ষ্য রেখে উচ্চারণ না করলে, এক হরফের স্থানে অন্য হরফ উচ্চারণ হয়ে যাবার আশঙ্কা আছে, সে হরফগুলো সতর্ক দৃষ্টিতে উচ্চারণ করতে হবে, যেন এক হরফের স্থলে অন্য হরফ উচ্চারিত হয়ে লাহানে জলী হয়ে গোনাহগার না হতে হয় ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *