দোয়া

৫০+ গুরুত্বপূর্ণ দোয়া বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ

Share this

দোয়া শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ‘আহবান’ বা ‘ডাকা’  “দোয়া হচ্ছে ইবাদতের সারাংশ”; আল্লাহ কোরআন-এ বলেছেন তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। এই আর্টিকেলটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী দোয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে ঘুমের দোয়া, মাথা ব্যথার দোয়া, বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া এবং আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়ার মতো প্রয়োজনীয় দোয়াগুলো উল্লেখ করা হয়েছে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়াও, ইস্তিগফার, ইস্তেখারা, আকিকার দোয়া, ইসমে আজম দোয়া, অজুর দোয়া, আজানের জবাব ও দোয়া এবং সর্বাধিক মূল্যবান দোয়া সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনার প্রয়োজনীয় সকল দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারবেন-

Table of Contents

বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া

মানুষ জীবনের বিভিন্ন ধরনের বিপদ ও সংকটে পড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া এবং তাঁর কাছে দোয়া করা প্রতিটি মুসলিমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কয়েকটি দোয়া উল্লেখ করা হলো, যা বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া বাংলা উচ্চারণ সহ

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও হতাশা থেকে, আমি আপনার আশ্রয় চাই দুর্বলতা ও অলসতা থেকে, আমি আপনার আশ্রয় চাই ভয় ও কৃপণতা থেকে, এবং আমি আপনার আশ্রয় চাই ঋণের বোঝা ও মানুষের কর্তৃত্ব থেকে।

বিপদ থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করার পাশাপাশি, আল্লাহর উপর ভরসা রাখা, ধৈর্য ধারণ করা এবং নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা বলেন,

“আর যখন আমার বান্দারা তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তখন বলে দাও, নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দিই, যখন সে আমাকে ডাকে। অতএব, তারা আমার আনুগত্য করুক এবং আমার প্রতি বিশ্বাস রাখুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে

বিপদ থেকে মুক্তির জন্য এ দোয়াটি ও পড়া যায়-

رَبَّنَاۤ اَنۡزِلۡ عَلَیۡنَا مَآئِدَۃً مِّنَ السَّمَآءِ تَكُوۡنُ لَنَا عِیۡدًا لِّاَوَّلِنَا وَ اٰخِرِنَا وَ اٰیَۃً مِّنۡكَ ۚ وَ ارۡزُقۡنَا وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ

বাংলা উচ্চারণ:- উচ্চারণ: রাব্বানা আনজিল আলাইনা মায়িদাতাম মিনাস সামায়ি তাকুনু লানা ঈদাল লিআওয়ালিনা ওয়া আখিরিনা ওয়া আয়াতাম মিনকা; ওয়ারজুকনা ওয়া আনতা খাইরুর রাজিকিন।

বাংলা অর্থ: হে আমাদের রব! আমাদের জন্য আকাশ থেকে খাদ্যে পরিপূর্ণ খাঞ্চা নাজিল করুন, যা আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য আনন্দের উপলক্ষ হবে এবং আপনার পক্ষ থেকে একটি নিদর্শন হিসেবে পরিগণিত হবে। আর আমাদের রিজিক দান করুন, কারণ আপনিই সর্বোত্তম রিজিকদাতা।

আরো পড়ুন: তাশাহুদ দুরুদ শরীফ দোয়া মাসুরা

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া

ইসলামে অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া এবং তার জন্য দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। যখন কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন তার শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার প্রতি খেয়াল রাখা এবং তার জন্য দোয়া করা আমাদের কর্তব্য। নিচে কিছু দোয়া উল্লেখ করা হলো,

রোগ মুক্তির জন্য দোয়া

রোগ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যা মানুষের জীবনে আসতে পারে। ইসলামে, যে কোনো ধরনের বিপদ বা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর সাহায্য চাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগ একটি কঠিন সময় হতে পারে, তবে আল্লাহর দয়া ও সাহায্য কামনা করে দোয়া পাঠ করলে আমরা তার রহমত পেতে পারি।

اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَاسَ اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বান-নাসি আজহিবিল-বাসা, ইশফিহি ওয়া আনতাশ-শাফি, লা শিফাআ ইল্লা শিফাউকা শিফাআন লা ইয়ুগাদিরু সাকামা।

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! হে মানুষের রব! কষ্ট দূর করুন এবং রোগীকে সুস্থতা দান করুন। আপনিই তো আরোগ্য দানকারী, আপনার আরোগ্য ছাড়া আর কোনো আরোগ্য নেই। এমন আরোগ্য দিন, যা কোনো রোগ অবশিষ্ট রাখবে না।

আরো পড়ুন: তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত | তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

ইস্তেগফার দোয়া

ইস্তিগফার শব্দটি আরবি শব্দ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ থেকে এসেছে, যার অর্থ “আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি”। এটি পাপমুক্তি ও আল্লাহর রহমত লাভের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দোয়া। তাওবাহ (পরিত্রাণ) এবং ইস্তিগফার দুটোই পাপ থেকে মুক্তির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ইসলামে বিবেচিত। পাপী মানুষের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং তার রহমত আশা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইসলামে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনায় অনেক দোয়া ও ইস্তিগফার রয়েছে, যা ব্যক্তিকে আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধি এবং আল্লাহর নিকট সম্পর্কের উন্নতি সাধনে সহায়ক। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্তিগফারের দোয়া উল্লেখ করা হলো, যা পাপ থেকে মুক্তি এবং আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের জন্য সহায়ক হতে পারে:

আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া

ইস্তিগফার পাঠ করার বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে, এবং সবচেয়ে সহজ উপায় হলো “আস্তাগফিরুল্লাহ” বলা। “আস্তাগফিরুল্লাহ” একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হলো “আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইছি”। এটি একটি সংক্ষিপ্ত দোয়া হলেও, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি। “আস্তাগফিরুল্লাহ” একটি সহজ, সরল ও অতি কার্যকর দোয়া যা আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সহজ উপায়।

  • আস্তাগফিরুল্লাহ প্রতিদিন ৭০-১০০ বার ইস্তিগফার পড়া সুন্নত।
  • আস্তাগফিরুল্লাহ নামাজের পর, তাহাজ্জুদে, সকালে ও রাতে বেশি বেশি পড়া উত্তম।
  • আস্তাগফিরুল্লাহ বিপদ-মুসিবতে পড়লে আল্লাহ সাহায্য করেন।

আরো পড়ুন: আয়াতুল কুরসি | Ayatul kursi bangla

সাইয়েদুল ইস্তেগফার

মানুষ হিসেবে আমরা সবাই ভুল করি, কারণ আমরা অনর্থক কাজ বা গোনাহ করে ফেলি। তবে আল্লাহর রহমত এবং ক্ষমা লাভের জন্য আমাদের ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাইয়েদুল ইস্তিগফার হলো একটি বিশেষ দোয়া, যা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে এবং তাঁর মাগফিরাত (ক্ষমা) অর্জন করতে সহায়তা করে। এটি পাপ থেকে মুক্তির জন্য একটি শক্তিশালী আমল।

আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া আরবি বাংলা

অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তোমাকে ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, আর আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী তোমার প্রতি করা অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতিতে অবিচল থাকার চেষ্টা করছি। আমি আমার কৃতকর্মের কুপ্রভাব থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার প্রতি তোমার অনুগ্রহ স্বীকার করছি এবং আমার গুনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব, তুমি আমাকে ক্ষমা করো, কারণ তুমি ছাড়া পাপ ক্ষমা করার কেউ নেই।

  • প্রতিদিন ফজরের পর ও সন্ধ্যায় মাগরিবের পর ১ বার করে পড়া সুন্নত।
  • গুনাহ করলে সাথে সাথে পড়া উচিত।
  • বেশি বেশি পড়লে জান্নাতের আশা করা যায়।

সাইয়েদুল ইস্তিগফার নিয়মিত পাঠ করা আমাদের পাপ থেকে মুক্তি এবং আল্লাহর নিকট সম্মান ও রহমত লাভের অন্যতম উপায়।

ইস্তেখারা নামাজের নিয়ম

ইস্তেখারা নামাজ ইসলামী দোয়ার একটি বিশেষ আমল, যা মুসলমানরা আল্লাহর কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করতে এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক পথ প্রদর্শন কামনা করার জন্য পড়েন। “ইস্তেখারা” শব্দের অর্থ হলো “কল্যাণ প্রার্থনা করা” বা “সেরা কিছু চাওয়া”। যখন কোনো ব্যক্তি জীবন বা কর্মসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না, তখন তারা আল্লাহর কাছে দোয়া করে ইস্তেখারা নামাজ পড়েন এবং আল্লাহর সাহায্য ও নির্দেশনা চেয়ে প্রার্থনা করেন। নিচে ইস্তেখারার নামাজের নিয়ম উল্লেখ করা হলো-

  • ওজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ুন।
  • প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে সূরা আল-কাফিরুন  এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে সূরা আল-ইখলাস পড়া উত্তম।
  • নামাজ শেষ করে নিচের ইস্তেখারার দোয়া পড়ুন।

ইস্তেখারার দোয়া

ইস্তেখারা শব্দের অর্থ হলো “কল্যাণ প্রার্থনা করা”। যখন কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হয়, যেমন বিয়ে, চাকরি, ব্যবসা, বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, তখন এই দোয়া পড়া হয়। ইস্তেখারা নামাজের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, যেন তিনি আমাদের জন্য সঠিক পথ দেখান এবং আমাদের কল্যাণ নিশ্চিত করেন।

ইস্তেখারা দোয়াটি ইসলামের একটি বিশেষ আমল, যা আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে এবং আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। এটি আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং ভরসা জোগায়, কারণ আমরা জানি যে আল্লাহ সর্বদা আমাদের ভালোর জন্য কাজ করেন।

ইস্তেখারার দোয়া বাংলা উচ্চারণ সহ

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার অশেষ জ্ঞানের মাধ্যমে কল্যাণ প্রার্থনা করছি, তোমার সীমাহীন ক্ষমতার মাধ্যমে শক্তি কামনা করছি এবং তোমার বিশাল অনুগ্রহ থেকে সাহায্য চাইছি। নিঃসন্দেহে, তুমি সবকিছু করতে সক্ষম, আর আমি অক্ষম। তুমি সবকিছু জানো, আর আমি জানি না। এবং তুমি অদৃশ্যের পূর্ণ জ্ঞান রাখো।

হে আল্লাহ! যদি এই (___) কাজটি আমার জন্য আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং পরিণতির জন্য কল্যাণকর হয়, তাহলে তুমি তা আমার জন্য নির্ধারণ করো, সহজ করে দাও এবং এতে বরকত দান করো। কিন্তু যদি এটি আমার জন্য আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং পরিণতির জন্য ক্ষতিকর হয়, তাহলে তুমি তা আমার থেকে দূরে সরিয়ে দাও এবং আমাকে এর থেকে দূরে রাখো। তারপর যেখানেই কল্যাণ থাকে, তুমি তা আমার জন্য নির্ধারণ করো এবং আমাকে তাতে সন্তুষ্ট করে দাও।

ইস্তেখারা নামাজ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী আমল, যা মুসলিমদের জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে

আরো পড়ুন: ইসলামিক ধাধা

ঘুমের দোয়া

ঘুমের দোয়া ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী একটি আমল। ঘুমের সময় আল্লাহর আশ্রয় ও নিরাপত্তা কামনা করা উচিত, যাতে শয়তান, বিপদ বা ক্ষতিকর কিছু আমাদের ক্ষতি না করে।

ঘুমানোর আগের দোয়া

ঘুমানোর আগে পড়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া রয়েছে,এই দোয়া পড়ার মাধ্যমে আপনি আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবেন এবং শয়তানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিরাপদ থাকবেন।

بِاسْمِكَ رَبِّ وَضَعْتُ جَنْبِي وَبِكَ أَرْفَعُهُ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ

বাংলা উচ্চারণ: বিসমিকা রাব্বি ওয়ালা’তু জামবি ওয়া বিকা আরফাউহু, ইন আমসাকতা নাফসি ফারহামহা, ওয়া ইন আরসালতাহা ফাহফাযহা বিমা তাহফাযু বিহি ইবাদাকাস সালিহীন।

বাংলা অর্থ: হে আমার রব! তোমার নামের সাথে আমি আমার শরীর রাখলাম এবং তোমার নামের সাথে আমি এটি উঠাব। যদি তুমি আমার আত্মা রেখে দাও, তবে এর প্রতি দয়া করো, আর যদি তুমি তা ফিরিয়ে নাও, তবে এর নিরাপত্তা রক্ষা করো, যেমনভাবে তুমি তোমার নেক বান্দাদের নিরাপত্তা রক্ষা করো।

ঘুম থেকে ওঠার দোয়া

ঘুম থেকে ওঠার দোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা আল্লাহর শুকরিয়া ও সাহায্য কামনা করার জন্য পড়া হয়। ঘুম থেকে উঠে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করার একটি দোয়া রয়েছে-

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ

উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।

অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করলেন এবং তাঁর দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন।

ঘুমের সময় আমাদের আত্মা আল্লাহর কাছে ফিরে যায়, এবং ঘুম থেকে উঠে আমাদের শরীর ও মন পুনরায় সচল হয়। এই সময়ে আল্লাহর আশীর্বাদ প্রার্থনা করা জরুরি, কারণ তিনি আমাদের জীবিত রাখেন এবং আমাদের দেহ ও আত্মা সুরক্ষিত রাখেন।

আরো পড়ুন: মসজিদে প্রবেশের দোয়া

মাথা ব্যথার দোয়া

মাথা ব্যথা বা শারীরিক কোনো কষ্টের জন্য দোয়া পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করার একটি উপায়। মাথা ব্যথা বা অন্য কোনো শারীরিক অসুস্থতা হলে দোয়া পড়া শুধু রোগের আরাম দেয় না, বরং এটি আল্লাহর কাছে আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং বিশ্বাসের প্রকাশ।

মাথা ব্যথা কমানোর দোয়া বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থসহ

মাথা ব্যথা কমানোর জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া

হযরত উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে আমার মাথা ব্যথার কথা বললাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, তোমার ডান হাত তোমার ব্যথার স্থানে রাখ এবং সাতবার এই দোয়াটি পড়ো।

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাযী লা ইয়াদুররু মা’আ ইসমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিসসামাই ওয়াহুয়াস সামীউল আলীম।

অর্থ: আল্লাহর নামে, যাঁর নামের সাথে পৃথিবীতে বা আকাশে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এই দোয়াটির মাধ্যমে ব্যথার স্থানটিতে আল্লাহর রহমত প্রার্থনা করা হয় এবং এটি শারীরিক কষ্ট থেকে মুক্তির জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম।

আরো পড়ুন: মাথা ব্যথা নিয়ে এ পোস্টটি পড়তে পারেন

ইসমে আজম দোয়া

ইসমে আজম” শব্দের অর্থ হলো “আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নাম”। এটি এমন একটি নাম বা দোয়া, যার মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকলে তিনি দোয়া কবুল করেন। হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে, কিছু বিশেষ নাম আছে, যা দিয়ে আল্লাহকে ডাকলে তিনি সাড়া দেন এবং এসব নাম দ্বারা যে কিছু চাওয়া হয়, তা কখনোই খালি হাতে ফেরত পাঠান না।

ইসমে আজম দোয়া বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থসহ

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি একমাত্র সত্য আল্লাহ, আপনার ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আপনি একক এবং স্বতন্ত্র, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং নিজেও কোনো একজন দ্বারা জন্মগ্রহণ করেননি, আর আপনার সমকক্ষ কেউ নেই।

ইসমে আজম দোয়া-

ইসমে আজম দোয়া কয়টি

ইসমে আজম দোয়া-

ইসমে আজম দোয়া তিনটি

দোয়া কবুল হওয়া: ইসমে আজমের মাধ্যমে করা দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। হাদিসে বলা হয়েছে, যখন ইসমে আজম দিয়ে আল্লাহকে ডাকা হয়, তখন আল্লাহ তার বান্দার প্রার্থনা শুনে তা মঞ্জুর করেন।

নিয়মিত পড়া: ইসমে আজম দোয়া এমন একটি দোয়া, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শান্তি, সাফল্য এবং সুরক্ষা প্রদান করতে পারে।

আল্লাহর সান্নিধ্য: ইসমে আজমের মাধ্যমে আল্লাহর নাম স্মরণ করা আমাদের আল্লাহর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও আস্থা জাগ্রত করে।

প্রত্যাশিত ফল লাভ: ইসমে আজম দোয়া করার মাধ্যমে আমাদের যে কোনো প্রার্থনা, ইচ্ছা বা প্রয়োজন পূর্ণ হতে পারে।

শত্রু থেকে রক্ষা: ইসমে আজমের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করলে শত্রুর আক্রমণ বা বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

এই দোয়াটি প্রতিটি মুসলিমের জীবনে বিশেষ গুরুত্ব রাখে এবং তা নিয়মিত পড়া জীবনে বিপদ থেকে রক্ষা, কল্যাণ লাভ এবং আল্লাহর কাছ থেকে রহমত পাওয়ার মাধ্যম হতে পারে।

আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানুষ কে

দুনিয়া আখিরাতের কল্যাণ চেয়ে দোয়া

ربَّنَا اتنا فى الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا

عَذَابَ النَّار

উচ্চারণ : রাব্বা আতিনা ফিদ্ দুনিয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়া কিনা আ’যাবান্ নার | হে আমাদের রব! আমাদেরকে এই দুনিয়ায় কল্যাণ দান করো এবং পরকালেও কল্যাণ দাও আর জাহান্নামের আযাব হতে আমাদেরকে রক্ষা করো।

আল্লাহর গযব থেকে মুক্ত থাকার দোয়া

ربَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا اصْرًا كَمَا حَمَلْتَه عَلَى الَّذِينَ

مِنْ قَبْلِنَا

উচ্চারণ : রাব্বানা ওয়ালা, তামিল আ’লাইনা ইস্রান কামা হামালতাহু আলাল্লাযিনা মিন ক্বাবলিনা।

অর্থ : হে আমাদের রব! আমাদের ওপর সেই ধরনের বোঝা চাপিয়ে দিও না, যেরূপ বোঝা আমাদের পূর্ববর্তী অপরাধী জাতির প্রতি চাপিয়ে দিয়েছিলে ।

ঋণগ্রস্ত ও চিন্তিত অবস্থার দোয়া

اَعُوذُبِكَ مِنَ الْهَمِ والحَزْنِ وأعوذُبِكَ مِنَ اَللّهُمَّ إِنِّى – – الْعِجْزِ وَالْكَسْلِ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَالْبُخْلِ.

واعوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدِّينِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ . وَاَعُوْذُبِكَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আ’উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি ওয়া আ’উযুবিকা মিনাল ‘ইজযি ওয়াল কাসলি ওয়া আ’উযুবিকা মিনাল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া আ’উযুবিকা মিন গালাবাতিদ্দায়নি ওয়া কাহরির রিজালি ।

ফযীলত : যথানিয়মে উক্ত দোয়াটি পাঠ করলে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি অতি সহজে ঋণমুক্ত হয় এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তির দুশ্চিন্তা দূর হয় এর জ্বলন্ত প্রমাণ হিসেবে একটি হাদীস পেশ করা হল ।

তিরমীযি, আবু দাউদ ও ইবনে কাছীর নামক গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, একদা নবী করীম (সাঃ) কোন একজন সাহাবীকে ঋণের চিন্তায় চেহারা মলিন দেখে তাঁকে উক্ত দোয়াটি শিক্ষা দিলেন। উক্ত দোয়া পাঠের ‘আমল দ্বারা দ্রুতভাবে তার ঋণ পরিশোধ হয়ে গেল এবং তার সকল সমস্যা দূর হয়ে

শত্রুর ভয় থেকে মুক্ত থাকার দোয়া

رَبَّنَا إِنَّنَا نَخَافُ أَنْ يَفْرُطُ عَلَيْنَا أَوْ أَنْ يُطغى –

উচ্চারণ : রাব্বানা ইন্নাকা নাখাফু আই ইয়াত্বা আলাইনা আও আই ইয়াত্বগা ৷

অর্থ : হে আমাদের রব! আমরা ভয় করছি সে আমাদের সাথে বাড়াবাড়ি করবে, অথবা সে আরো বেশী সীমা লংঘন করে বসবে ।

কঠিন কাজ উদ্ধারের দোয়া

بد

انی اللهم إنى لا أملكُ لِنَفْسِى ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا وَلاَ مَوْناً

وو

ولاحيوة ولا نُشُوراً وَلاَ اسْتَطِبْعُ أنْ أخَذُ الأما أَعْطَيْتَنِي وَلَا أَنْ أَتَّقِى إلا ما وَتَيْتَنِي اللَّهُمَّ وَفِفُني

لِمَا تُحِبُّ وَتَرْضَى مِنَ الْقَوْلِ وَالْعَمَلِ فِى عَافِيَتِي

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি লা আমলিকু লিনাফসী দ্বাররাওঁ ওয়ালা নাফ’আঁও ওয়ালা মাউতাওঁ ওয়ালা হায়াতাওঁ ওয়ালা নূশরাওঁ ওয়ালা আসতাত্বী‘উ আন আখুযা ইল্লা মা আ‘অত্মাইতানী ওয়ালা আন আত্তাক্কী ইল্লা মা ওয়াতাইতানী। আল্লাহুম্মা ওয়াক্কিনী লেমা তুহিব্বু ওয়াতারদ্বা মিনাল ক্বাওলি ওয়াল ‘আমালি ফী ‘আফিয়াতী।

কঠিন বিপদ আপদ দেখা দিলে পড়ার দোয়া

إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ . اَللّهُمَّ أَجِرْنِى فِى

صِيبَتِى وَاخْلِفُ لِى خَيْرٌ مِّنْهَا .

উচ্চারণ ঃ ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনা, আল্লাহুম্মা আজিরনী। ফী মুছীবাতী ওয়াখলিফলী খাইরাম্ মিনহা ।

ফযীলত : কারও কোন মৃত্যুর সংবাদ শুনে কিংবা কোন প্রকার বিপদ বা অসুবিধা দেখা দিলে উল্লিখিত দোয়াটি পাঠ করা সুন্নত। এ ছাড়া যে কোন কঠিন ও জটিল কাজ উদ্ধারের জন্য এ দোয়াটি পাঠ করলে সে বিপদসমূহ এবং কঠিন ও জটিল কাজের ক্ষতির তুলনায় অতি উত্তম প্রতিদান মহান আল্লাহ্ তাকে ইহকালে ও পরকালে দান করবেন ।

এ হাদীস হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) শুনে স্বীয় স্বামীর মৃত্যুর সময়ে তিনি উক্ত দোয়াটি পাঠ করেছিলেন। এর ফযীলতে দেখা গেল যে, তিনি ইহকালে ও পরকালে তাঁর মৃত স্বামীর চেয়েও উত্তম বিনিময় লাভ করলেন । অর্থাৎ তিনি পরবর্তীতে রাসূলে কারীম (সাঃ)-কে স্বামীরূপে পেয়ে ইহকালে ও পরকালে চির ধন্য হয়েছিলেন।

কিয়ামতের দিনে হিসাব সহজভাবে নেয়ার দোয়া

رَبَّنَا إِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِيَوْمٍ لا رَيْبَ فِيْهِ، إِنَّ اللهَ لا

يُخلف الميعاد .

উচ্চারণ ঃ রাব্বানা ইন্নাকা জামিউ’ন নাসি লিইয়াও মিল লারাইবা ফিহী, ইন্নাল্লাহা লা ইউথ্ লিফুল মিয়া’দ।

অর্থ : হে আমাদের রব! তুমি অবশ্যই সমগ্র মানব জাতিকে তোমার সামনে হিসাব-নিকাশের জন্য একদিন একত্রিত করবে, এতে কোনো রকম সন্দেহ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’য়ালা কখনোই ওয়াদা ভঙ্গ করেন না।

আরো পড়ুন:- পরীক্ষা পাশের দোয়া

শেষ বিচারের দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টি চেয়ে দোয়া

ربَّنَا انَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْلَنَا ذُنُونَا وَقنَا عَذَاب النار .

উচ্চারণ : রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাফির লানা যুনুবানা ওয়া কিনা আ’যাবান্নার ।

অর্থ : হে আমাদের মালিক! আমরা অবশ্যই তোমার প্রতি ঈমান এনেছি, এরপর আমাদের থেকে যেসব গোনাখাতা হয়ে যায় তা তুমি ক্ষমা করে দাও এবং শেষ বিচারের দিনে তুমি আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচিয়ে দিয়ো । (সূরা আলে ইমরাণ-১৬)

ঘরে প্রবেশ করার দোয়া

دوس

اَللّهُمَّ إِنِّى أَسْتَلْكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ وَخَيرًا لمَخْرَجَ بِسْمِ اللهِ وَلَجْنَا وَبِسْمِ اللهِ

خرجنا وَعَلَى الله ربَّنَا تَوَكَّلْنَا .

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরাল মাওলাযি ওয়া খাইরাল মাখরাজা বিসমিল্লাহি ওয়ালাযনা ওয়াবিসমিল্লাহি খারাজনা ওয়াআল্লাহি রাব্বানা তাওয়াকালনা ৷

ঘর হতে বের হবার দোয়া

لاَحَوْلَ بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ لاحول ولا قوة الا بالله

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ ।

ঘরে প্রবেশ করার দোয়া

دوس

اَللّهُمَّ إِنِّى أَسْتَلْكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ وَخَيرًا لمَخْرَجَ بِسْمِ اللهِ وَلَجْنَا وَبِسْمِ اللهِ

خرجنا وَعَلَى الله ربَّنَا تَوَكَّلْنَا .

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরাল মাওলাযি ওয়া খাইরাল মাখরাজা বিসমিল্লাহি ওয়ালাযনা ওয়াবিসমিল্লাহি খারাজনা ওয়াআল্লাহি রাব্বানা তাওয়াকালনা ৷

ঘর হতে বের হবার দোয়া

لاَحَوْلَ بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ لاحول ولا قوة الا بالله

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি লা হাওলা ওয়ালা

কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ । হিসনে হাসীন বা দোয়ার ভাণ্ডার

চাকরির জন্য দোয়া

ফযীলত ও নিয়ম : যদি কোন লোক চাকুরি না পেয়ে বেকার থাকে তাহলে সে ব্যক্তি নিম্নোক্ত আয়াত ও নকশাটি এক টুকরা সাদা কাগজে লিখে নিজের ডান হাতে বেঁধে চাকরির খোঁজ করতে থাকবে। ইনশাআল্লাহ চারি মিলে যাবে ।

اللهُ لَطِيفٌ بِعِبَادِهِ يَرزَقُ مَن يَشَاء وَهُوَ الْقَوَى الْعَزِيز –

উচ্চারণ : আল্লাহু লাত্বীফুম বি‘ইবাদিহী ইয়ারযুকু মাইইয়াশাউ ওয়াহুওয়াল ক্বাওয়ীয়্যুল আযীম। ঋণ পরিশোধের তদবীর

ফযীলত : প্রতিদিন সকালবেলায় মহান আল্লাহ্র এ পবিত্র গুণবাচক নামটি দশবার পাঠ করে নিজের হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে সে হাতের তালু মুখমণ্ডলে বুলায়ে দিলে সে ব্যক্তি কখনও গরীব থাকবে না। এ ছাড়া খানা শেষ করে হাত না ধুয়ে এ দোয়াটি ৭২ বার পাঠ করলে সে ব্যক্তি কখনও অর্থশূন্য হবে না ।

দ্বীনের পথে অবিচল থাকার দোয়া

ربَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وثبت أقدامَنَا وَانْصُرْنَا على

الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

উচ্চারণ : রাব্বানা আফ্রিগ্ আ’লাইনা সারাও ওয়া ছাবিত আবূদামানা ওয়াসুরনা আ’লাল ক্বাওমিল কাফিরীন।

অর্থ : হে আমাদের রব! আমাদেরকে ধৈর্য দান করো, আমাদের পদক্ষেপ সুদৃঢ় করো এবং কাফির দলের ওপর আমাদেরকে বিজয় দান করো। (সূরা বাকারা-২৫০)

ভুল হলে ক্ষমা চাওয়ার দোয়া

ربَّنَا لا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَانَا –

উচ্চারণ : রাব্বানা লা তুআখিনা ইন্নাসিনা আও আখ্তা’না ।

অর্থ : হে আমাদের রব! যদি আমরা কিছু ভুলে যাই, যদি আমরা কোনো ভুল করে বসি তার জন্য তুমি আমাদেরকে গ্রেফতার করো না। (সূরা বাকারা-২৮৬)

নতুন কাপড় পরার সময়ের দোয়া

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِى كَسَانِى مَا أَوَارِى بِهِ أَورَتَى

واتجمل به في حياتي .

উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লাহি হিল্লাযি কাছানী মা উয়ারী বিহী আওরাতী ওয়া আতাযাম্মালু বিহী ফী হায়াতি ।

মিথ্যার ওপর বিজয়ী হবার দোয়া

ربَّنَا اغْفِرْلَنَا ذُنُوبَنَا وَاسْرَافَنَا فِي أمْرنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا

وانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَفِرِينَ .

উচ্চারণ : রাব্বানাগ্ ফির লানা যুনুবানা ওয়া ইস্রাফানা ফি আরিনা ওয়া ছাবিত আকন্দামানা ওয়ান্ সুরনা আ’লাল ক্বাওমিল কাফিরীন

অর্থ : হে আমাদের মালিক! তুমি আমাদের যাবতীয় গোনাহখাতা মাফ করে দাও, আমাদের কাজকর্মের সব বাড়াবাড়ি তুমি ক্ষমা করে দাও এবং বাতিলের মোকাবেলায় তুমি আমাদের কদম মযবুত রাখো, সত্য ও মিথ্যার সাথে যুদ্ধে কাফিরদের ওপর তুমি আমাদের বিজয় দাও। (সূরা আলে ইমরাণ-১৪৭)

সৃষ্টিসমূহ থেকে কল্যাণ লাভের দোয়া

رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هذا باطلاً، سُبْحَانَكَ فَقِيْنَا عَذَابَ النَّارِ .

উচ্চারণ : রাব্বানা মা খালাক্তা হাযা বাত্বিলা, সুবহানাকা ফাকিনা আ’যাবান্নার ।

অর্থ ঃ হে আমাদের রব! সৃষ্টি জগতের কোনো কিছুই তুমি অযথা বানিয়ে রাখোনি, তোমার সত্তা সবথেকে পবিত্র, অতএব তুমি আমাদের জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে নিষ্কৃতি দাও। (সূরা আলে ইমরাণ-১৯১)

রোগী দেখতে গেলে পড়ার দোয়া

اَذْهِبِ البَاسَ رَبِّ النَّاسَ وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِى لاَشِفَاء

و

الا شفَأَنكَ شِفَاء لا يغادر سقما .

উচ্চারণ : আহিবি বাছা রাব্বান্নাছা ওয়াশফি আনতা আশশাফি লা শিফাআন ইল্লা শিফাউকা শিফাউল্লা ইউথ্বাদিরু ছাকামান ।

কাউকে বিদায় দেওয়ার সময় পড়ার দোয়া

اَسْتَودِعُ اللهَ دِينَكَ وَأَمَانَتَكَ وَخَوَاتِيمَ عَمَلِكَ .

উচ্চারণ : আসতাউল্লাহা দি- নাকা ওয়াআমানাতাকা ওয়া খাওয়াতিমা আমাালিকা ।

সৎকাজ কবুল হওয়ার দোয়া

– رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا – انَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ –

উচ্চারণ : রাব্বানা তাক্বাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আনতাস্ সামিউ’ল আলিম

অর্থ : হে আমাদের রব! আমাদের এই কাজ তুমি কবুল করো, তুমি নিশ্চয়ই সব কিছু শুনতে পাও এবং সব কিছুই জানো। (সূরা বাকারা-১২৭)

সূর্যোদয় কালে পড়ার দোয়া

اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِى اَقَالَنَا يَوْمَنَا هَذَا وَلَمْ يُهْلِكْنَا بِذُنُوبِنَا .

উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী আক্কালানা ইয়াওমানা হাযা ওয়ালাম ইউলিকনা বিযুবিনা ।

ফযীলত : সূর্যোদয়ের সময়ে এ দোয়া পাঠকারী ব্যক্তি ইন্‌শাআল্লাহ্ সারাদিন নিরাপদে থাকবে ।

আনন্দিত হবার পরে পড়ার দোয়া

– إِنَّ الحَمدُ لله الذي أذهَبَ عَنَّا الحَزَنَ ان ربنا لغَفُور

شکور –

আল হাম্দু লিল্লাহিল্লাযি আযহাবা আ’ন্নাল হাযানা, ইন্না রাব্বানা লাগাফুরুন শাকুর । আল্লাহর প্রশংসা, যিনি আমাদের কাছ থেকে যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট দূরীভূত করে দিয়েছেন, অবশ্যই আমাদের মালিক ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী। (সূরা ফাতির-৩৪)

সৎপথে আগমনকারীর জন্য দোয়া

رَبَّنَا وَسَعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَحمَةً وَعِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا

واتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ –

উচ্চারণ : রাব্বানা ওয়া সি’তা কুল্লা শাই-ইর রাহ্মাতাঁও ওয়া ই’লমান ফাফির লিল্লাযিনা তাবু ওয়াত্ তাবাউ’ সাবিলাকা ওয়া কিহিম আ’যাবাল

অর্থ : হে আমাদের মালিক! তুমি তোমার অনুগ্রহ ও জ্ঞানসহ সবকিছুর ওপর ছেয়ে আছো, সুতরাং সেসব লোককে তুমি ক্ষমা করে দাও যারা তওবা করে এবং যারা তোমার দ্বীনের পথে চলে, তুমি তাদের জাহান্নামের আযাব

ঈমানের জ্যোতি বৃদ্ধি করার দোয়া

ربَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْلَنَا إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ –

উচ্চারণ : রাব্বানা আমিম লানা নুরানা ওয়াফির লানা, ইন্নাকা আ’লা কুল্লি শাই-ইন কাদির।

অর্থ : হে আমাদের রব! আমাদের জন্য আমাদের ঈমানের জ্যোতিকে জান্নাতের জ্যোতি দিয়ে তুমি পূর্ণ করে দাও, তুমি আমাদের ক্ষমা করে দাও, অবশ্যই তুমি সব কিছুর ওপর একক ক্ষমতাবান। (সূরা আত্ তাহ্রীম-৮) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দোয়া

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক পদক্ষেপে মহান আল্লাহ তা’য়ালার প্রশংসা করতেন এবং সাহায্য চাইতেন। তিনি যেভাবে  আল্লাহ তা’য়ালার প্রশংসা করতেন এবং তার কাছে সাহায্য চাইতেন, তা হাদীস গ্রন্থসমূহে উল্লেখ রয়েছে।

তিনি যে ভাষায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রশংসা করতেন এবং তার কাছে সাহায্য চাইতেন, মুসলিম হিসেবে আমাদেরও উচিত, তাঁর শিখানো পদ্ধতি অনুযায়ী আল্লাহর প্রশংসা করা এবং তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া। এখানে আমরা হাদীস থেকে কিছু দোয়া এখানে উল্লেখ করছি ।

বাড়ি থেকে বের হওয়ার দোয়া

বাড়ির হতে বের হলেই শয়তান তার পিছনে লাগে। ঐ সাথে আল্লাহর| অগণিত ফেরেশতাদের মধ্যে ফেরেশতারাও সাথী হয়। যদি সে ব্যক্তি নিম্নের দু’আটি পড়ে নেয়, তখন শয়তান সরে পড়ে এবং ফেরেশতারা তার সঙ্গী হন । বিসমিল্লাহ বলে দরজা খোলা। বাম পা দিয়ে ঘর থেকে বের হওয়া এবং বের হওয়ার সময় নিম্নের দু’আ পড়া।

، بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ لَا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلَّا بِالله

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি ওয়া লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ ।

অর্থ : আল্লাহর নামে বের হচ্ছি। আল্লাহর উপরে আমার ভরসা। আল্লাহ প্রদত্ত শক্তি ছাড়া কোন ভাল কাজ সম্পাদন করে কোন মন্দ কাজ পরিহার করার সামর্থ্য কারও নেই । এতে আল্লাহ পাক স্বয়ং তার জিম্মাদার হয়ে যাবেন।

বাড়িতে প্রবেশ করার সময় দোয়া

যখন ঘরে প্রবেশ করবে তখন নিম্নের দু’আ পড়ে সালাম দিবে-

اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ بِسْمِ اللهِ وَالجْنَا وَبِسْمِ اللهِ خَرَجْنَا وَعَلَى اللهِ رَبَّنَا تَوَكَّلْنا .

উচ্চারণ : “আল্লা-হুম্মা ইন্নী-আসআলুকা খায়রাল মাওলাজি ওয়া খায়রাল মাখরাজি, বিসমিল্লা-হি ওয়ালাজনা ওয়া বিসমিল্লা-হি খারাজনা ওয়া আলাল্লাহি রাব্বানা-তাওয়াক্কালনা।”

অর্থ : : হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট ভিতরে প্রবেশ করার এবং বের হবার মঙ্গল কামনা করছি। আমি আল্লাহর নামে প্রবেশ করলাম এবং তার নামেই বের হওয়া এবং আমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপর ভরসা করলাম।

ভুল করলে ক্ষমা চাওয়ার দোয়া

ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা চাওয়ার দোয়া

رَبَّنَا امَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَ اَنْتَ خَير الرّحِمينَ

উচ্চারণ ঃ রাব্বানা আমান্না ফাগফির লানা ওয়ার হাম্না ওয়া আনতা খাইরুর রাহিমীন।

অর্থ : হে আমাদের মালিক! আমরা তোমার ওপর ঈমান এনেছি, অতএব তুমি আমাদের দোষত্রুটিসমূহ মাফ করে দাও, তুমি আমাদের ওপর দয়া করো, তুমি হচ্ছো দয়ালুদের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট দয়ালু। (সূরা আল মুমিনুন-১০৯)

হিংসা দূর করার দোয়া

মন থেকে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করার দোয়া

ربنا اغفرلنا ولاخْوَاننَا الَّذينَ سَبَقُونَا بالايمان ولا

الله

تَجْعَلْ فِي قُلُوبَنَا غلاً للذينَ آمَنُو رَبَّنَا انَّكَ رَؤُوفٌ

الرَّحِيمِ-

উচ্চারণ : রাব্বানাগ্ ফিরলানা ওয়ালি ইয়া নিনাল্লাযিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি ওয়া লা তাআ’ল ফী কুলূবিনা গিল্লাল লিল্লাযিনা আমানু রাব্বানা ইন্নাকা রাউফুর রাহিম ।

অর্থ : হে আমাদের মালিক! তুমি আমাদের মাফ করে দাও, আমাদের আগে আমাদের যে ভাইয়েরা ঈমান এনেছে তুমি তাদেরও মাফ করে দাও এবং আমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে, তাদের ব্যাপারে আমাদের মনে কোনো রকম হিংসা বিদ্বেষ রেখো না, হে আমাদের মালিক! তুমি অনেক মেহেরবান ও পরম দয়ালু। (সূরা আল হাশর-১০)

ভালো কাজ করার দোয়া

رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتي أَنْعَمْتَ عَلَى وَعَلى والدى وأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضه وادخلني برحمتك في

عبادك الصلحين

উচ্চারণ : রাব্বি আওযি’নী আন আশকুরা নি’মাতাকাল লাতি আনআ’মতা আ’লাই ইয়া ওয়া আ’লা ওয়ালি দাই ইয়া ওয়া আন আ’মালা সালিহান তারদ্বাহু ওয়া আদখিলনী বিরাহমাতিকা ফী ই’বাদিকাস সালিহীন।

অর্থ : হে আমার মালিক! তুমি আমাকে তাওফীক দাও যাতে করে আমাকে ও আমার পিতামাতাকে তুমি যেসব নি’মাত দান করেছো, আমি যেন বিনয়ের সাথে তার কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি, আমি যেন এমন সব নেক কাজ করতে পারি যা তুমি পসন্দ করো, অতপর তুমি তোমার অনুগ্রহ দিয়ে আমাকে তোমার নেককার মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করে নাও । (সূরা আন নামল-১৯)

এ ধরনের দোয়া পবিত্র কোরআনে অনেক রয়েছে। উল্লেখিত দোয়াসমূহ মুখস্থ করুন এবং হজ্জ আদায়কালে এবং নামাযে বেশী বেশী এসব দোয়া পাঠ করতে থাকুন। বিশেষ করে যখন নফল নামাযে সিদায় যাবেন, সিজদার তাবীহ্ পাঠ করার পরে এসব দোয়া মহান আল্লাহর কাছে বিনয়ের সাথে নিবেদন করুন ।

দেহে কোথাও ব্যথা হলে এই দোয়া পড়

নবী করীম বলেন, তোমার দেহের যে স্থানে তুমি ব্যথা অনুভব করছো সেখানে তোমার হাত রেখে তারপর তিনবার বিসমিল্লাহ বলো এবং সাতবার নিম্নের দোয়া পড়ো—

اَعُوْذُ بِاللهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا اَجِدُ وَاَحَاذِرُ .

উচ্চারণ ঃ আউযু বিল্লাহি ওয়া কুদরাতিহি মিন শাররি মা আজিদু ওয়া আহাযিযু।

অর্থ : যে ক্ষতি আমি অনুভব করছি এবং যার আমি আশঙ্কা করছি তা থেকে আমি আল্লাহর মর্যাদা ও তাঁর কুদরতের মাধ্যমে তার আশ্রয় প্রার্থনা করছি ।

দেহের প্রত্যেক অঙ্গ সুস্থ রাখার জন্য এভাবে দোয়া

اللهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِى – اللَّهُم عَافِنِى فِى

اللهم عافِنِي بَصَرِى – لا إِلهَ إِلا أَنْتَ –

ـمعـ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ‘আফিনী ফী বাদানী, আল্লাহুম্মা ‘আফ্রিনী ফীসাঈ, আল্লাহুম্মা ‘আফিনী ফী বাসারী লা-ইলাহা ইল্লা আন্তা ।

অর্থ : হে আমার মালিক! তুমি আমার দেহের নিরাপত্তা দান করো, আমার কানের নিরাপত্তা দান করো, আমার চোখের নিরাপত্তা দান করো। হে আমার মালিক! তুমি ব্যতীত দাসত্ব লাভের যোগ্য কোনো ইলাহ্ নেই ।

নতুন চাঁদ দেখলে যে দোয়া পড়তে হয়

اللهُ أَكْبَرُ، اللَّهُمَّ أهلَهُ عَلَيْنَا با الأمن والإِيْمَانِ والسلامة والإسلام، والتوفيق لمَا تُحِبُّ رَبَّنَا وَتَرْضَى

ربُّنَا وَرَبَّكَ اللهُ.

উচ্চারণ : আল্লাহ আকবার, আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলায়না বিল আমনি ওয়াল ঈমানী ওয়াসালামাতি ওয়াল ইসলামি ওয়াত্তাওফিকি লিমা তুহিব্বু রাব্বানা ওয়া তারদ্বা রাব্বুনা ওয়া রাব্বুকাল্লাহ ।

অর্থ : আল্লাহ সবচেয়ে বড়ো, হে আল্লাহ! এই নতুন চাদকে আমাদের নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সাথে এবং যা তুমি ভালোবাসো, আর যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও, সেটাই আমাদের তাওফীক দাও। আল্লাহ আমাদের এবং তোমার (চাদের) প্রভু। (তিরমিযী, দারেমী)

রাগ কমানোর উপায় দোয়া

রাগ দূর করার জন্য এভাবে দোয়া করুন

أعُوذُ بالله منَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ.

আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি বিতাড়িত অভিশপ্ত শয়তান হতে।

(বোখারী, মুসলিম)

বিপন্ন মানুষকে দেখে এই দোয়া পড়ন

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي عَافَانِي مِمَّا ابْتَلاكَ بِهِ وَفَضَّلَنِي عَلَى

كَثِيرٍ مِمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيلاً.

উচ্চারণ : আলহাম্দু লিল্লাহিল লাযি আ’ফানি মিম্মাব্ তালাকা বিহী ওয়া ফাদ্বালানি আ’লা কাসিরিন মিম্মান খালাকা তাদ্বিলা ।

অর্থ : সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহ তা’য়ালার জন্য যিনি তোমাকে যে বিপদ দ্বারা পরীক্ষায় নিপতিত করেছেন তা হতে আমাকে নিরাপদে রেখেছেন এবং তার সৃষ্টির অনেকের চেয়ে আমাকে অধিক অনুগ্রহীত করেছেন । (তিরমিযী)

সন্ধ্যা হলেই এই দোয়া পড়ুন

সন্ধ্যা হলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন-

اللَّهُمَّ بِكَ – وَبِكَ أَصْبَحْنَا – وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ

وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ –

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বিকা আমসাইনা ওয়া বিকা আসবাহনা ওয়া বিকা নাহ্ইয়া, ওয়া বিকা নামৃতু ওয়া ইলাইকাল মাসীর ।

অর্থ : হে আমার মালিক! তোমারই অনুগ্রহে সন্ধ্যায় উপনীত হই এবং তোমারই অনুগ্রহে প্রত্যুষে উপনীত হই। তোমারই মর্জিতে জীবিত রয়েছি, তোমারই ইচ্ছায় মৃত্যুবরণ করি, আর তোমারই কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (তিরমিযী)

হাঁচি দেওয়ার পর দোয়া

হাঁচি আসলে এবং শুনলে এভাবে দোয়া করুন

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে-আল-হামদু লিল্লাহ- সমস্ত প্রশংসা আলাহর জন্য-বে, তখন প্রতিটি মুসলমান যে তা শুনবে তার উপর অবশ্য কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায় ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা- অর্থাৎ আল্লাহ আপনার উপর অনুগ্রহ বর্ষণ করুন। যখন সে তার জন্য বলবে ইয়ারহামুকাল্লাহ তখন সে (হাঁচি দাতা) তদুত্তরে যেনো বলে-

يَهْدِيكُمُ اللهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ.

উচ্চারণ ঃ ইয়াহুদি কুমুল্লাহু ওয়া ইউলিহু বালাকুম ।

আল্লাহ আপনাদের সৎপথ প্রদর্শন করুন এবং অবস্থা ভালো করুন।

হালাল জীবিকার জন্য এভাবে দোয়া করুন

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيّبًا ، وَعَمَلًا مُتَقَب

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আছআলুকা ইলমান নাফিয়ান ওয়ারিজকান ত্বায়্যিবান ওয়াআমালান মুতাক্বাব্বালান ।

অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করছি উপকারী ইলম ও প্রশস্ত রিযিক এবং সবধরনের রোগ-ব্যধি থেকে ।

ঘুম কম হলে করণীয়

إِنَّ اللهَ وَمَلئِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ

مَلِيمًا – نُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلمو

উচ্চারণ : ইন্নাল্লাহা ওয়ামালা ইকাতাহু ইউছাল্লুনা ‘আলান্নাবিয়্যি ইয়া আইয়্যুহাল্লাযীনা আমানূ ছাল্লু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লিমূ তাসলীমান ।। ছাড়া আরও উল্লেখ আছে যে, যদি ঘুম না আসে তাহলে শোয়া অবস্থায় মনে মনে (ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুমু) পড়তে থাকবে। (গানজিনায়ে আসরার)

নিয়ম : যদি কোন লোকের ঘুম কম হয় তাহলে সে ব্যক্তি ঘুমানোর আগে বেশি বেশি করে মাথায় তেল ব্যবহার করবে। আর তা না হলে উল্লেখিত আয়াতে কারীমাটি এগারবার করে পাঠ করলে ইনশাআল্লাহ্ সহজেই ঘুম আসবে ।

নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম হতে জাগ্রত হওয়ার দোয়া

নিয়ম : নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম হতে জাগ্রত হবার ইচ্ছা করলে ঘুমানোর আগে তিনবার করে উল্লেখিত দোয়াটি পাঠ করবে এবং মনে মনে আল্লাহ্র নিকট দোয়া মুনাজাত করে সময়ের কথা স্মরণ করে ঘুমিয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ্ যথাসময়ে ঘুম হতে জাগ্রত হয়ে যাবে ।

اَللّهُمَّ لأنو مِنَّا مَكْرَكَ وَلاَ تُنْسِنَا ذِكْرَكَ وَلاتَهْتِكَ

لاتؤ

عنَّا سِتْرَكَ وَلاَ تَجْعَلْنَا مِنَ الْغَافِلِينَ .

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লা তু’মিন্না মাকরাকা ওয়ালা তুনসিনা যিকরাকা ওয়ালা তাহতিকা ‘আন্না সিত্রাকা ওয়ালা তাজ’আলনা মিনাল গাফিলীনা।

কুকুরের কান্না শুনে পড়ার দোয়া

اعوذبا للهِ مَنَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ.

উচ্চারণ : আ’উযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম ।

আয়নায় মুখ দেখার সময় পড়ার দোয়া

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা হাসসানতা খালক্বী ফাহাসসিন খুলুকী ।

খাওয়া আরম্ভকালে পড়তে হয়

بسْمِ اللهِ وَعَلى بَرَكَةِ اللهِ .

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি ওয়া আ’লা বারাকাতিল্লাহ ।

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া

রোগাক্রান্ত ব্যক্তির জন্য এই দোয়া সাত বার পড়তে হয়

يشفيك – اسأل الله العَظِيمَ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ إِنْ يَشْفِيكَ اَسْأَلُ

উচ্চারণ : আসআলুল্লাহাল আযীম রাব্বীল আরশিল আযীমি আই ইয়াশফীকা ।

সূর্য উদয়ের সময় পড়বে

الْحَمْدُ اللهِ الَّذِى اَقَالَنَا يَوْمَنَا هُذَا وَلَمْ يُهْلِكُنَا بِذُنُوبِنَا .

উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী আক্কালানা ইয়াওমানা হা-যাওয়া লাম ইউহ- লিকনা বিষ্ণুনুবিনা।

মাগরিবের আযান হবার কালে পড়বে

اَللّهُمَّ إِنَّ هَذَا إِقْبَالُ لَيْلِكَ وَادْبَارُ نَهَارِكَ وَاَصْوَاتٌ دَعَاتِكَ

فَاغْفِرْ لى .

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না হাযা ইকবালু লাইলিকা ওয়া ইদবারু নাহারিকা ওয়া আছওয়াতু দা’আতিকা ফাগফিরলী ।

নতুন জামা-কাপড় পরার দোয়া

اللهم لك الحمد كما كسوتنِيه اسئلك خيره وخَيْرَ مَا صَنَعَ لَه وَأَعُوذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعَ لَهْ .

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু কামা কাছাওতানীহি, আসআলুকা খাইরাহু ওয়া খাইরা মা ছুনিয়া লাহু ওয়া আঊযু বিকা মিন শাররিহী ওয়া শাররি মা ছুনিয়া লাহু।

কোন স্থানে অগ্নিকাণ্ড দেখলে : “আল্লাহু আকবার” পড়ে মাটির চাকায় ফুঁক দিয়ে আগুনে নিক্ষেপ করলে ইনশা আল্লাহ আগুন নিভে যাবে । এই দোয়াও পড়া যায়-

উচ্চারণ ঃ ইয়া নারু কূনী বারদাওঁ ওয়া সালামান আ’লা ইব্রাহীম ।

يَا نَارُ كُونِي بَرْدًا وَسَلَامًا عَلَى إِبْرَاهِيمَ .

لا إلهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِى كُنْتُ مِنَ الظَّلِمِينَ .

যে কোন বালা-মসিবতে পড়লে দোয়া ইউনুস পড়তে হয়

উচ্চারণ ঃ লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনাজ জালিমীন ।

নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন, যে মুসলমান রোগাক্রান্ত অবস্থায় দোয়া ইউনুস চল্লিশ বার পড়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করবে সে রোগে মারা গেলে শহীদের দরজা পাবে। আর যদি আরোগ্য লাভ করে তবে সম্পূর্ণ পাপমুক্তি হয়ে উঠবে

বিশ লাখ নেকীর দোয়া

উচ্চরণ ঃ লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা শারীকালাহু আহাদান ছামাদান লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ ।

চল্লিশ বৎসরের গুনাহ মাপের দোয়া : রাসূলে আকরাম (সাঃ)-এর পবিত্র হাদীসে বর্ণিত আছে, শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ সূর্য ডুবার সময় নিচের এই দু,আ চল্লিশ বার পাঠ করলে চল্লিশ বৎসরের ছগীরা গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।

لَا حَوْلَ وَلا قوه الا بالله .

উচ্চারণ : লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ ।

এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নেকীর দোয়া : যে কেউ প্রত্যেহ একশত বার এ দো’আ পাঠ করবে তার আমলনামায় একলক্ষ চব্বিশ হাজার সওয়াব লেখা হবে ।

ভাল স্বপ্ন দেখলে

ভাল স্বপ্ন দেখলে আলহামদু লিল্লাহ বলতে হয়

কোন নেককার বুদ্ধিমান লোকের কাছে তা প্রকাশ করবে। আর মন্দ স্বপ্ন দেখলে নিজের বাম দিকে তিন বার থুথু ফেলবে এবং পার্শ্ব পরিবর্তন করে শুবে। অথবা নফল নামাযে মগ্ন হতে হয় ।

আর এই দোয়াটি তিন বার পাঠ করতে হয় ঃ

উচ্চারণ ঃ আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম ওয়া মিন শাররি হাযিহির রুইয়া । ঘুম হতে জেগে পড়তে হয় :

الحَمدُ لِلهِ الذِى احيانا بعداما امتنا واليه النشور.

উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লাহিল্লী যী আইহয়ানা বা’দা মাআমাতানা ওয়া ইলাহইহিন নুশূর । যে কোন বিপদের সময় পড়তে হয় :

– إِنَّ لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ . اللَّهُمَّ أَجِرْنِى فِى مُصِيبَتِى وَاخَلِف

لى خَيْرًا مِّنْهَا .

উচ্চারণ : ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন । আল্লাহুম্মা আজিরনী মুসীবাতি ওয়া আখলিফ লী খাইরাম মিনাহা ।

বিমারীকে লক্ষ্য করে পড়ার দোয়া :

উচ্চারণ : লা বা’ছা তুহুরুন ইনশাআল্লাহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *