নামাজ

গাড়িতে নামাজ পড়ার নিয়ম

Share this

যানবাহনে নামাজ

মাসয়ালা ঃ নৌকায় যাতায়াতকালে যদি নামাযের ওয়াক্ত হয়, তবে চলতি নৌকায়ও নামাজ  পড়া জায়েয। যে সকল নামাযে ফরজ, ওয়াজিব এবং ফজরের সুন্নতে দাঁড়ান ফরয, সে সকল নামাজ  যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো গুরুতর ওযর (যেমন, রোগ বা মাথা ঘুরান) না পাওয়া যাবে,

ততক্ষণ পর্যন্ত দাঁড়ানো মাফ হবে না। অবশ্য যদি নৌকাটি দাঁড়াবার উপযুক্ত না হয় বা দাঁড়ালে মাথা ঘুরে পড়ে যাবার আশঙ্কা হয়, (এবং কূলে নামবারও কোনো উপায় না থাকে,

বা নামাযের সময় বৃষ্টি হতে থাকে, তজ্জন্য বের হওয়া না যায়, কিংবা চতুর্দিকে কাদাময় স্থান হয় এবং নামাজ  পড়ার মত শুকনো জায়গা পাওয়া না যায়) তবে অবশ্য বসে নামাজ  পড়া দুরুস্ত হবে। (এভাবে নামাযের মধ্যে কিলার দিকে মুখ করাও ফরয,

এই ফরযও কিছুতেই মা’ফ হতে পারে না। যদি নৌকা বা স্টিমার ঘুরে যায়, তবে নামাযের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে, নতুবা নামাজ  হবে না । নৌকা যদি কূলে বা ঘাটে বাধা থাকে, তবে তাতে দাঁড়িয়ে নামাজ  পড়লে দুরুস্ত হবে বটে,

কিন্তু এই অবস্থায় নৌকার তলি যদি মাটির সঙ্গে সংলগ্ন না থাকে, তবে কোনো কোনো আলেমের মতে দাঁড়িয়ে নামাজ  পড়লেও দুরুস্ত হবে না। নৌকার তলি মাটির সঙ্গে লাগানো হলে দাঁড়িয়ে নামাজ  পড়লে সকলের মতেই দুরুস্ত হবে ।

আরো পড়ুন:- কসর নামাজের নিয়ম

মাসয়ালা : অনুরূপ রেলগাড়িতে যাতায়াতকালেও পথিমধ্যে নামাযের ওয়াক্ত হলে গাড়িতে নামাজ  পড়া দুরুস্ত আছে, যদি কারোর মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যাবার প্রবল আশঙ্কা হয়, তবে তার জন্য অবশ্য বসে নামাজ  পড়া দুরুস্ত হবে। অন্যথায় দাড়িয়ে পড়তে হবে।

মাসয়ালা : নামাজ  পড়া অবস্থায় যদি গাড়ি বা নৌকা ঘুরে যায়, তবে সাথে সাথে ঘুরে কিবলা যে দিকে সেই দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হবে ।

মাসয়ালা : গরুর গাড়ি বা ঘোড়ার গাড়িতে যাতায়াতকালে যদি নামাযের ওয়াক্ত হয়, তবে গাড়ি থামিয়ে বোরকা পরে নিচে নেমে নামাজ  পড়বে, গাড়িতে বসে নামাজ

পড়লে নামাজ  হবে না। যদি অযু না থাকে এবং গাড়ির ভিতর অযূ করার ব্যবস্থা না থাকে তবে বোরকা পড়ে নিচে নেমে আড়ালে বসে অযূ করে নিবে। যদি বোরকা না থাকে,

তবে বড় কোনো কাপড় বা চাদর দ্বারা আপাদমস্তক আবৃত করে নিচে নেমে নামাজ  পড়বে। শরিয়তে পর্দার এবং লজ্জাশীলতার খুব তাকিদ ও প্রশংসা করা হয়েছে বটে, কিন্তু প্রত্যেক জিনিসেরই এটা সীমা আছে। সীমা অতিক্রম করে গেলে কোন জিনিসই ভাল থাকে না।

অতএব, লজ্জার কারণে বের হয়ে নামাজ  না পড়া বা অযূ না করা কিছুতেই সঙ্গত নয়। অবশ্য যথাসম্ভব পর্দা অবশ্যই করতে হবে এবং অকারণে পর্দা-পালনে ত্রুটি করা নির্লজ্জতা ও গুনাহ্ ।

মাসয়ালা : অবশ্য যদি এমন রোগী হয় যে, রোগের কারণে অক্ষম তাহলে তার জন্য বসে নামাজ  পড়া জায়েয । গাড়ি থামিয়ে ঘোড়া বা গরু ছেড়ে দিয়ে তারপর নামাজ  পড়বে।

মাসয়ালা : এভাবে পাল্কি বা ঢুলি যতক্ষণ বাহকের কাছে থাকবে ততক্ষণ তাতে নামাজ  পড়া দুরুস্ত হবে না। অতএব যদি পথিমধ্যে নামাজের ওয়াক্ত হয়, তবে পাকি থামিয়ে নামাজ  পড়বে ।

যদি সুস্থ শরীর হয়, তবে বোরকা পরে পাল্কি হতে নেমে এসে দাঁড়িয়ে নামাজ  পড়বে। আর যদি এ রকম রোগগ্রস্ত হয় যে, দাড়িয়ে নামাজ  পড়তে পারে না, তবে পাকি জমিনে রেখে পাল্কির মধ্যেই নামাজ  পড়লে তা দুরুস্ত হবে।

মাসয়ালা : এভাবে উট বা ঘোড়ার পিঠেও বিনা ওযরে বসে বসে ফরয নামাজ  পড়া দুরুস্ত নয় । অবশ্য যদি গাড়ি বা ঘোড়া হতে নামলে জান-মাল ধ্বংস হবার প্রবল আশঙ্কা থাকে, তবে নেমে সেখানেই বসে নামাজ  পড়লে তাও দুরুস্ত হবে। কিন্তু নফল নামাজ  ঘোড়ার পিঠে বা গাড়িতে বা নৌকায় সর্বাবস্থায়ই বসে পড়া জায়েয ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *