নামাজ

নামাজে সূরা মিলানোর নিয়ম

Share this

মাসয়ালা : কুরআন শরীফে সূরাগুলো যে তরতিব অনুযায়ী লেখা আছে নামাজেরর মধ্যে সেই তরতিব অনুযায়ী পড়া উচিত। তবে আমপারায় যে তরতিব অনুযায়ী লিখেছে সে তরতিব অনুযায়ী পড়বে না।

সেখানে যে সূরা পরে লিখেছে সেই সূরা আগে পড়বে এবং যে সূরা আগে লিখেছে সেই সূরা পরে পড়বে। যেমন যদি কেউ প্রথম রাকাতে ‘কুল্‌ইয়া’ পড়ে তবে দ্বিতীয় রাকাতে সূরা-‘ইযাজা— সূরা- ‘কুলহুআল্লাহু’ অথবা ‘সূরা-ফালাক’ বা ‘ সূরানাস’ পড়বে, ‘আলামতারা বা ‘লিঈলাফি— পড়বে না।

কুরআন শরীফ উল্টা তরতিবে পড়া মাকরুহ্; অবশ্য কদাচিৎ ভুল বশত উল্টা তরতিবে যদি কেউ পড়ে ফেলে, তবে মাকরূহ্ হবে না ।

মাসয়ালা : যে সূরা শুরু করা হয়েছে সেই সূরাই পড়ে শেষ করবে। অকারণে অন্য সূরা শুরু করা বা কয়েক জায়গা হতে খণ্ড খণ্ড ভাবে কয়েক আয়াত এক রাকাতে পড়া মাকরূহ্ ।

মাসয়ালা : ফরজ নামাযের শেষের দুই রাকাতে শুধু আল্হামদু পড়বে, সূরা মিলাবে না। সূরা মিলালেও নামায হবে। নামাযে কোনো ত্রুটি হবে না ।

মাসয়ালা ঃ ফরজ নামাযের শেষের দুই রাকাতে আল্হামদু পড়া সুন্নত। যদি কেউ আল্হামদু না পড়ে তিনবার সুবহানাল্লাহ্ পড়ে, বা কিছু না পড়ে (শুধু তিনবার সুবহানাল্লাহ্ পড়ার পরিমাণ সময়) চুপ করে দাড়িয়ে থেকে রুকু করে, তবুও নামায হয়ে

যাবে; (কিন্তু এমন করা ভাল নয়, বরং আল্হামদু পড়া উচিত)।

হয় তাই পড়তে পারে। কোনো নামাযের জন্য সূরা নির্দিষ্ট করে নেয়া মাকরুহ।

আরো পড়ুন:-একা নামাজ পড়ার নিয়ম

মাসয়ালা : কোনো নামাযের জন্য কোনো সূরা নির্দিষ্ট নেই, যে কোনো সূরা ইচ্ছা মাসয়ালা : প্রথম রাকাত অপেক্ষা দ্বিতীয় রাকাতে লম্বা সূরা পড়বে না।

মাসয়ালা : যে ব্যক্তি নামায জানে না, অর্থাৎ কেবল নতুন মুসলমান হয়েছে, সে নামাযের মধ্যে সব জায়গায় ‘ সুবহানাল্লাহ্’ ‘আল্লাহু আকবার’ বা ‘ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ইত্যাদি দুয়া, দুরুদ, তসবিহ ইত্যাদি পড়তে থাকবে।

এতেই তার ফরজ আদায় হয়ে যাবে এবং পর্যায়ক্রমে নামাযের সূরা, কালাম, দুয়া, দুরুদ, তসবিহ ইত্যাদি শিক্ষা করতে থাকবে। যদি এই সব শিখতে আলস্য বা অবহেলা করে, তবে শক্ত গুনাহগার হবে ।

মাসয়ালা : সূরা ফাতেহা পড়া যখন শেষ হয় তখন পাঠক এবং শ্রোতা সকলেই আস্তে আস্তে ‘আমীন’ বলবে। তারপর ইমাম (বা মুনফারেদ) অন্য সূরা শুরু করবে।

মাসয়ালা : সফর বা জরুরতের অবস্থায় আলহামদুর পর যে কোনো সূরা পড়া যেতে পারে, তাতে কোন বাধা নেই। কিন্তু সফর বা জরুরতের অবস্থা যদি না হয়, তবে ফজরে এবং যোহরে তেওয়ালে মুফাছ্‌ছাল, আছরে ও এশায় আওছাতে মোফাছছাল এবং মাগরিবে কেছারে মুফাছ্‌ছাল পরিমাণ সূরা পড়া সুন্নত।

সূরা হুজরাত হতে সূরা বুরুজ পর্যন্ত সূরাগুলোকে তেওয়ালে মুফাছ্‌ছাল, — সূরা-ত্বারেক’ হতে ‘ লামইয়াকুনু— পর্যন্ত আওছাতে মুফাছ্‌ছাল বলে । ফজরের প্রথম রাকাতে দ্বিতীয় রাকাত অপেক্ষা অধিক লম্বা সূরা পাঠ করা উচিত। এতদ্ব্যতীত অন্যান্য নামাযে প্রথম এবং দ্বিতীয় উভয় রাকাত সমান হওয়া উচিত ।

দুই এক আয়াত বেশি-কম হলে অসুবিধা নেই ।

মাসয়ালা : ফজরের উভয় রাকাতে, মাগরিব ও এশার প্রথম দুই রাকাতে এবং জুম’য়া, দুই ঈদ, তারাবিহ্ রমযানের সময় বেতরের সব রাকাতে জারিয়া এবং উচ্চৈঃস্বরে কিরাত পড়া ইমামের ওপর ওয়াজিব ।

মাসয়ালা : ইমাম হোক বা মোনফারেদ হোক সকলের জন্যই যোহর ও আছরের সব রাকাতে এবং মাগরিবের শেষে এক রাকাতে ও এশার শেষের দুই রাকাতে ছিররান বা চুপে চুপে কিরাত পড়া ওয়াজিব।

মাসয়ালা : দিনের নফলের কিরাত চুপে চুপে পড়া ওয়াজিব, কিন্তু রাতের নফলের (সুন্নতের ও বেতরের) কিরাত ব্যক্তির ইচ্ছাধীন, জারান বা ছিরনি যে কোনো প্রকারে পড়তে পারে ।

মাসয়ালা : ফজর, মাগরিব বা এশার নামাযের কাযা দিনের বেলায় একা পড়লে চুপে চুপে কিরাত পড়া ওয়াজিব এবং রাতের বেলায় পড়লে তা তার ইচ্ছাধীন।

কিন্তু যদি একদল লোক জামাতে কাযা নামায পড়ে, তবে ইমামের জোরে কিরাত পড়া ওয়াজিব, রাতে পড়ুক বা দিনে পড়ুক । যদি কেউ মাগরিবের বা এশার প্রথম বা দ্বিতীয় রাকাতে সূরা মিলাতে ভুলে যায়, তবে তার তৃতীয় বা চতুর্থ রাকাতে সূরা মিলাতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *